কায়রো: পোড়া গাড়ি, রাস্তায় ইট-পাথর এবং ঘন কালো ধোঁয়া, মিশরের রাজধানীকে সহজেই যুদ্ধক্ষেত্র বলে চালিয়ে দেওয়া যায়। মিশরের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পতন দাবি করে দেশের জনগণ প্রতিবাদ শুরু করার পাঁচদিন পর মিশর বাস্তবিক অর্থেই এখন একটি যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
এ বিক্ষোভ-প্রতিবাদের অংশ হিসেবে শনিবার কায়রোর শহরতলির তাহরির স্কয়ারের সমবেত হন হাজার হাজার বিুব্ধ জনতা। ‘আল্লাহু আকবর’ এবং ‘জনগণ প্রেসিডেন্টের পতন চায়’, এরকমই স্লোগান শোনা যাচ্ছিল সমাবেত জনতার মধ্যে থেকে।
একইসঙ্গে হাজার হাজার সমবেত কন্ঠে কেঁপে উঠে মিশর, ‘মোবারক পতন হোক!’
এরইমধ্যে সরকার আরোপিত কারফিউ আমান্য করেছে মোবারক বিরোধী প্রতিবাদকারীরা। একইসঙ্গে অব্যাহতভাবে জানিয়েছে আসছে মোবারকের পতনের দাবি।
হাসান (৩০) নামের এক প্রতিবাদকারী বলেন, ‘প্রেসিডেন্টের অবশ্যই যেতে হবে। আমরা শুধু এটাই চাই। মোবারকের শুধু ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হবে। সে গত ৩০ বছর থেকে ক্ষমতা আঁকড়ে আছে। অনেক হয়েছে। ’
ক্ষুব্ধ কণ্ঠে তিনি আরও বলেন, ‘মিশরের উচিত শিল্প ও কৃষি ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা অর্জন করা। কিন্তু আমরা এখনও পেছনে পড়ে আছি। এটা স্বাভাবিক নয়। ”
অপর এক প্রতিবাদকারী, তরুণ মেডিক্যাল শিক্ষার্থী আলি বারা চিৎকার করে বলেন, ‘তিনি ক্ষমতা না ছাড়া পর্যন্ত আমরা রাস্তায় থাকবো। এটা হতে পারে এক বছর, এটা হতে পারে দু’বছর বা তারও বেশি, কিন্তু আমরা আমাদের অবস্থান পরিবর্তন করবো না। ’
গোলযোগপূর্ণ রাজধানী কায়রো শনিবার আদতেই এক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। শুক্রবার থেকে ক্ষমতাসীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির ভবন থেকে বের হওয়া কালো ধোঁয়া আকাশ বাতাসকে আচ্ছন্ন করে ফেলে।
মূলত শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর থেকেই হাজার হাজার মানুষ বন্যার স্রোতের মতো মিশরের প্রধান শহরগুলোতে জড়ো হতে থাকেন। আরব বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশ মিশরে শুরু হওয়া অভূতপূর্ব এ প্রতিবাদ উদযাপনেই স্বতঃস্ফূতভাবে রাস্তায় নেমে আসেন জনগণ।
বিক্ষোভ প্রতিরোধে মঙ্গলবার থেকে রাস্তায় পুলিশের উপস্থিতি বেড়ে যায়। পরিস্থিতি খারাপ হলে শনিবার তাহরির স্কয়ারসহ আরও ১০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের সঙ্গে ট্যাংকসহ সেনাবাহিনীকেও যোগ দিতে দেখা গিয়েছে। এএফপি অবলম্বনে নুসরাত জাহান।
বাংলাদেশ সময়: ২২২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১১