ঢাকা: লাতিন আমেরিকার দেশ চিলিতে ৮ দশমিক ২ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬ জনে দাঁড়িয়েছে। তবে এ সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪৬ মিনিটে চিলির উত্তরাঞ্চলের বন্দর শহর ইকুয়িক শহর থেকে ৫৫ মাইল দক্ষিণে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূমিকম্প আঘাত হানার ৪৫ মিনিটের মধ্যে চিলি উপকূলে ছয় ফুট উচ্চতার (২.১১ মিটার) বেশ কয়েকটি ঢেউ আঁছড়ে পড়ে।
ভূমিকম্পের পরপর আরও অন্তত ৬০টি কম্পন অনুভূত হয়। এছাড়া, ৬ দশমিক ২ মাত্রার একটি মাঝারি পাল্লার ভূমিকম্পও আঘাত হানে।
মার্কিন ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল উপকূলীয় বন্দর শহর ইকুয়িক থেকে ৬২ মাইল উত্তর-পশ্চিমে সমুদ্রগর্ভের ১২ দশমিক ৫ মাইল গভীরে।
ভূমিকম্পের পরপরই চিলি, পেরু, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া ও পানামায় সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। তবে, বুধবার সকাল ৭টার আগেই পরিস্থিতি অনুকূলে বোঝে এ সতর্কতা চিলি থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
এর আগে, ভূমিকম্প আঘাত হানার পর সমগ্র দেশে সুনামি সতর্কতা জারি করা হয়। পরে পর্যায়ক্রমে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দিনগত রাত ৩টায় অ্যঁসা অঞ্চলের পুর্তো সাকাবুকোর দক্ষিণাঞ্চল থেকে সুনামি সতর্কতা প্রত্যাহার করা হয়। এরপর ভোর সাড়ে ৪টায় অ্যান্তোফাগাস্তা ও ভালপারাসিও শহরাঞ্চল থেকে এ সতর্কতা প্রত্যাহার করা হয়। আর সর্বশেষ বুধবার সকাল ৭টায় সমগ্র দেশ থেকে সুনামি সতর্কতা প্রত্যাহার করে নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, ভূমিকম্পে নিহতদের মধ্যে চারজন পুরুষ এবং দু’জন নারী বলে জানা গেছে। এছাড়া, রাতে ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে বলে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের সংখ্যা নির্ণয় করা যায়নি। বুধবার দিনে এ ব্যাপারটি খানিকটা অনুমান করা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, সুনামি সতর্কতা জারির পরপরই চিলির ভূমিকম্প উপদ্রুত উপকূলীয় এলাকা থেকে প্রায় ১ লাখ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ভূমিধস ও আগুন ধরে যাওয়ার আশঙ্কায় বন্দর কর্তৃপক্ষ বন্দর এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। বিভিন্ন এলাকায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
প্রেসিডেন্ট মিশেল বেসলেট চিলির উত্তরাঞ্চলের একাংশকে দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, প্রেসিডেন্ট মিশেল ইতোমধ্যে ভূমিকম্প উপদ্রুত অঞ্চলে উড়ে গেছেন।
ভূমিকম্পের পর ইকুয়িক শহরের একটি কারাগার থেকে ৩০০ কয়েদি পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
এ পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি উদ্ধার তৎপরতায় সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, ২০১০ সালে চিলিতে ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে পাঁচ শতাধিক লোকের প্রাণহানি ঘটে।
** চিলিতে ৮.২ মাত্রার ভূমিকম্পে ৬ ফুট ঢেউ, নিহত ৫
বাংলাদেশ সময়: ২১১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০১৪