ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

হাসপাতালে পৌঁছাতে

সাঁতরে নদী পাড়ি দিলেন নয় মাসের গর্ভবতী !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৪
সাঁতরে নদী পাড়ি দিলেন নয় মাসের গর্ভবতী ! ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সামনে খরস্রোতা কৃষ্ণা নদী। গর্ভে নয় মাসের সন্তান।

বর্ষায় বাড়বাড়ন্ত নদীতে তখন ১২ থেকে ১৪ ফুট উঁচুর ঘূর্ণায়মান প্রবাহ।
কিন্তু তার চিন্তায় কেবলই অনাগত সন্তানের নিরাপত্তা।

নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপগ্রামে নেই কোন হাসপাতাল বা প্রসবের জরুরি ব্যবস্থাও।

সন্তানকে বাঁচাতে হলে সন্তানসম্ভবা ইয়েল্লাওয়ার পাড়ি দিতেই হবে এই নদী। কিন্তু কোনো নৌকা বা অন্যকিছু না থাকায় সম্বল শুধু শুকনো লাউ।

এই সম্বল করে প্রায় এক কিলোমিটার সাঁতরে মূলভূমিতে যেতে পারলেই কেবল দেখা মিলবে হাসপাতালে যাওয়ার পথের।

অনাগত সন্তানের নিরাপদ প্রসবের ব্যবস্থা করতে ওই শুকনো লাউয়ের খোল সম্বল করেই নদীতে নেমে পড়লেন সন্তানসম্ভবা মা। পাশে অবশ্য সাঁতরেছেন বাবা-ভাইসহ আর ক‘জন পুরুষ স্বজন।

এ ভাবেই সাঁতড়ে নদী পাড়ি দিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের কৃষ্ণা নদীর ছোট্ট দ্বীপগ্রামের বাসিন্দা ইয়েল্লাওয়া (২২)।

সপ্তাহ তিনেক আগে গর্ভবর্তী ইয়েল্লাওয়া শুকনো লাউ ও কুমড়া ব্যবহার করে প্রায় এক কিলোমিটার প্রবল স্রোতের নদী সাঁতরে মূল ভূমিতে যান হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।

ইয়েল্লাওয়া বলেন, হাসপাতালের বিলের ব্যাপারে তারা ভীষণ দুশ্চিন্তায় ছিলেন। কিন্তু হাসপাতাল পুরো বিল মওকুফ করে দিয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, ‘তাকে বিনামূল্যে চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ’ তারা আরও বলেন, ‘আমরা গ্রামীণ নারীর শক্তির মূল্যায়ন করি। এমন এক সাহসী নারীর চিকিৎসা দিতে পেরে আমরা  গর্বিত। ’

একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার সন্তান প্রসব হয়। হাসপাতালের ডাক্তার বলেন, ‘পরিবারের লোকজন আশা করেছিল তার স্বাভাবিক প্রসব হবে। অস্ত্রোপচারের আগে আমরা সেজন্য কিছু সময় অপেক্ষাও করেছিলাম। গর্ভজাত শিশুটির উপর দিয়ে এমন ভারী ধকল না গেলে হয়তো স্বাভাবিক প্রসবই হত। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।