ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

অনলাইনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে ওয়াশ পোস্টে ব্যাপক রদবদল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৪
অনলাইনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে ওয়াশ পোস্টে ব্যাপক রদবদল

যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টের প্রকাশক পাল্টে গেলো। সংবাদপত্রটির ‍মালিক জেফরি পি বেজোস এবার ক্যাথরিন ওয়েমাউথের বদলে নয়া প্রকাশক বানালেন ফ্রেডরিক জে রায়ানকে।

সাবেক প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ছিলেন এই রায়ান জুনিয়র। এছাড়া সাড়া জাগানো অনলাইন সংবাদমাধ্যম পলিটিকোর প্রতিষ্ঠাতা নেতৃত্বেরও একজন তিনি। রাজনৈতিক খবর পরিবেশনায় এরই মধ্যে ওয়াশিংটন পোস্টের বড় প্রতিযোগী হয়ে উঠেছে এই পলিটিকো। মঙ্গলবারই নতুন এই নিয়োগের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

তবে ওয়েমাউথ, ৪৮, এর বিদায়ের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এই সেরা সংবাদমাধ্যমটির শীর্ষস্থানে গ্রাহাম পরিবারের দীর্ঘ আট দশকের নেতৃত্বের অবসান ঘটলো। ১৯৩৩ সালের ওয়েমাউথের প্র-পিতামহ কিনে নিয়েছিলেন পত্রিকাটি। ২০১৩‘র আগস্টে এটি কিনে নেন জেফরি পি বেজোস। ২৫০ মিলিয়ন ডলারের এই বিশাল কেনাবেচা হলেও পত্রিকার শীর্ষ পর্যায়ে কোনো পরিবর্তন আনেননি বেজোস। এভাবেই এক বছর চালিয়ে এবার পরিবর্তন আসলো প্রকাশকের নামে।

খবরে বলা হয়েছে, গত ১৮ আগস্ট ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে বেজোস প্রথম ওয়েমাউথকে তার নতুন প্রকাশক দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান। তবে এবছরের শেষ অবদি ওয়েমাউথ পত্রিকাটির পে-রোলে থাকছেন।

রায়ান, ৫৯, একজন অ্যাটর্নি এবং রিগান প্রশাসনের গোড়ার দিকগুলোতে তিনি প্রেসিডেন্টের প্রধান সহযোগীদের একজন ছিলেন। পরে রিগান ১৯৮৯ সালে হোয়াইট হাউস ছাড়লে তার প্রেসিডেন্সিয়াল লাইব্রেরি গঠন এবং আরও অনেক কাজের নেতৃত্বে ছিলেন এই রায়ান।

সোমবার একটি সাক্ষাৎকারে রায়ান ওয়াশিংটন পোস্টকে তার ডিজিটাল পাঠক সৃষ্টির দৌড়ে একটি বিশ্বমাপের নতুন প্রতিষ্ঠান হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, পোস্ট তার অগ্রগতি অব্যাহত রেখেছে, এতে কোনো সন্দেহই নেই।

জেফরি পি বেজোস অ্যামাজন.কম এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। একই সঙ্গে তিনি বিশ্বের সেরা ধনিদের একজন। নতুন করে ওয়াশিংটন পোস্টের পাঠক বাড়াতে উঠেপড়েই লেগেছেন তিনি। তবে তা ডিজিটাল পথে। এরই মধ্যে কয়েক ডজন নতুন সাংবাদিক নিয়োগ দিয়েছেন, আর ডিজিটাল পথে নিয়েছেন অনেক নতুন নতুন উদ্যোগ। বেজোস যাকে বলছেন, মিডিয়ার পরিবর্তীত দৃশ্যপটে উদ্ভাবনের জন্য রানওয়ে সৃষ্টি।

এই দৌড়ে রায়ানকে নিয়োগ দেওয়া সবশেষ সংযোজন। রায়ান এরই মধ্যে ডিজিটাল মিডিয়ায় তার যোগ্যতার প্রমাণ দেখিয়েছেন। তবে রায়ানের রিপাবলিকান রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ওয়াশিংটন পোস্টের রাজনৈতিক অবস্থানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। প্রশ্ন উঠছে গোটা জাতির কাছে প্রভাবশালী এই পত্রিকা কোন পথে হাঁটছে।  

সাক্ষাৎকারে রায়ান নিশ্চিত করেছেন সংবাদপত্রটির বর্তমান নির্বাহী সম্পাদক মার্টিন ব্যারোন এবং সম্পাদকীয় পাতার সম্পাদক ফ্রেড হিয়াটকে সরাচ্ছেন না। আর পোস্টের সম্পাদকীয় নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনার কথাও এই মুহূর্তে তার মাথায় নেই।

স্রেফ বলে দিয়েছেন তার হাতে বার্তাকক্ষের স্বাধীনতা খর্ব হবে না। আর ব্যারনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘তার কাজ অসাধারণ’।

এদিকে ওয়েমাউথের বিদায়ের ঘোষণায় বেজোস তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন। তিনি বলেন, আমি ক্যাথরিনের প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ, কারণ বিক্রির পরেও তিনি পত্রিকার প্রকাশক হিসেবে থেকে যেতে রাজি হয়েছিলেন। তার সফল নেতৃত্বে ওয়াশিংটন পোস্টের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ সুসম্পন্ন হয়েছে। আর দীর্ঘ ৮০ বছর পরে পত্রিকাটির মালিকানা পরিবর্তন হয়েছে সম্পূর্ণ ঝামেলামুক্তভাবে।

পোস্টের পরবর্তী প্রকাশক ও সিইও হতে রাজি হওয়ায় ফ্রেড রায়ানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বেজোস বলেন, আমি জানি এখন তিনি দলের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মিশে কাজ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন।

পহেলা অক্টোবর থেকে রায়ান আনুষ্ঠানিকভাবে তার নতুন দায়িত্ব শুরু করবেন। তবে মঙ্গলবারই বিকেলে একবার ওয়াশিংটন পোস্টের প্রধান কার্যালয়ে তার যাওয়ার কথা রয়েছে। এসময় তিনি সংবাদকক্ষে কর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্যও রাখবেন।

বাংলাদেশ সময় ২২৩৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।