ঢাকা: মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণকে সামনে রেখে উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে রাজ্যের রাজনীতি। আর ভারতের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্রের ভোটের রাজনীতির তপ্ত হাওয়ার আঁচ লাগছে দিল্লিতেও।
বুধবারের ভোট গ্রহণের আগে মোদীর উদ্দেশ্যে সরাসরি তোপ দাগলেন একদা বিজেপির সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্র হিসেবে অভিহিত শিবসেনা প্রধান উদ্ভব থ্যাকরে।
মঙ্গলবার দলীয় মুখপত্র সামনায় প্রকাশিত এক লেখায় মোদীকে চা’ওয়ালা হিসেবে অভিহিত করেন শিবসেনা প্রধান। এমনকি দাবি করলেন, শিবসেনা না থাকলে মোদী কেন, মোদীর ‘বাপ’ও লোকসভা নির্বাচনে জিততে পারতো না।
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে এই চা‘ওয়ালা টিটকারি মেনে নিতে পারেনি বিজেপি। এ ধরনের অসম্মান মেনে নেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপির অন্যতম শীর্ষ নেতা ও ঘনিষ্ঠ মোদী সহযোগী নিতিন গড়কোরি।
সম্প্রতি ২৫ বছরের জোট ভেঙ্গে যাওয়ার আগে বিজেপি ও শিবসেনা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতিতে পাশাপাশি চলেছে। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আসন ভাগাভাগির প্রশ্নে ঐক্যমত না হওয়ায় ভেঙ্গে যায় তাদের জোট। এ ব্যাপারে উভয় পক্ষই উভয় পক্ষকে দুষলেও ধারণা করা হচ্ছে এ বিচ্ছেদ আসলে উদ্ভব থাকরের সঙ্গে মোদীর ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ।
জোট ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকেই বিজেপি ও শিবসেনার মধ্যে শুরু হয় একে অপরকে দোষারোপের চাপানউতোর। বিশেষ করে উদ্ভব থ্যাকরে শুরু থেকেই বিজেপি তথা মোদীর সমালোচনায় মুখর। এতদিন আকারে ইঙ্গিতে এবং দলীয় মুখপত্র সামনায় বিভিন্ন সম্পাদকীয় কলামে নিজের অসন্তোষ প্রকাশ করে আসলেও এই প্রথম সরাসরি মোদীকে আক্রমণ করেন উদ্ভব থ্যাকরে।
সামনায় প্রকাশিত এক কলামে তিনি লেখেন,‘যদি একজন চা‘ওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন, তবে আমি কেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারবো না। ’
বিষয়টি যে বিজেপি ভালোভাবে নেয়নি তার প্রকাশ ঘটে নিতিন গড়কোরির উত্তরে। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আমরা সবাইকে সম্মান করে এসেছি। তবে যদি আমাদের কেউ অসম্মান করে তবে আমরা তা সহ্য করবো না।
উল্লেখ্য, বাল্যকালে মোদী ট্রেনে ঘুরে ঘুরে চা বিক্রি করতেন বলে জানা গেছে। আর আম জনতার প্রতিনিধি হিসেবে মোদীকে তুলে ধরতে ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারণায় মোদীর এই চা’ওয়ালার বিনয়ী ইমেজটিই ব্যাপকভাবে উপস্থাপন করে বিজেপি জোট।
বিজেপি শিবসেনা জোট লোকসভা নির্বাচনে জোটবদ্ধভাবে লড়ে রাজ্যের ৪৮টি আসনের মধ্যে ৪২টিতে জিতেছিলো। কিন্তু বিধানসভাকে সামনে রেখে ভেঙ্গে যায় তাদের জোট।
দুই দলের মধ্যে মূলত গোল বাঁধে মুখ্যমন্ত্রীর পদ নিয়ে। উদ্ভব থ্যাকরে কোনোভাবেই মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে নারাজ। অপরদিকে যে দল বেশি আসন পাবে সেই দল মুখ্যমন্ত্রী পদটি পাবে এই দাবিতে অনড় থাকে বিজেপি। ফলাফল ২৫ বছরের জোটে ভাঙ্গন।
বুধবার সকাল আটটা থেকে শুরু হয়েছে মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানা রাজ্যের ভোটগ্রহণ। মহারাষ্ট্রে ভোটের লড়াই মূলত হবে চতুর্মুখী। ধারণা করা হচ্ছে কোনো দলই শেষ পর্যন্ত সরকার গঠনের জন্য একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। মহারাষ্ট্র বিধানসভার মোট আসন ২৮৮টি। রাজ্যের বর্তমান ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস ও শারদ পাওয়ারের নেতৃত্বাধীন এনসিপির জোট।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০১৪