মস্কো: উইকিলিকস এর প্রতিষ্ঠাতারা আরেকটি তথ্য-বোমা ফাটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এবারের বিষয়, ইরাকে সামরিক অভিযান।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে উইকিলিকস প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এটা ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। এর ফলে আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক উন্নয়ন নিয়ে মানুষকে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও রাজনীতিবিদরা মাফ চায়তে বাধ্য হয়েছেন। এই তথ্য ফাঁসের মাধ্যমে বেরিয়ে আসে, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনা আফগানিস্তানে পাঠানোর পর থেকে গত নয় বছরে সেখানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে কথিত ‘ভুল বোমা হামলায়’। তালেবান বাহিনীও সামরিকভাবে দুর্বল হয়নি। তবে পেন্টাগন বলছে উল্টোকথা।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাবিষয়ক স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক পাভেল জোলোটারেভ এর মতে, এটা ধরে নেওয়ার যথেষ্ট যুক্তি আছে যে, ইরাক যুদ্ধের গোপন তথ্য ফাঁসের ঘটনা একইরকম আঘাত নিয়ে আসবে।
সংঘর্ষের একদিকে রয়েছে স্থায়ী সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যদিকে রয়েছে আধাসামরিক গেরিলা-কায়দার গোষ্ঠী। ফলে বেসামরিক লোকজনের নিহতের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে এবং প্রমাণিত হয়েছে, বিদ্যমান সংঘর্ষ বন্ধ করতে সামরিক-পন্থা কম কার্যকর।
ইরাকের ওপর গোপন দলিলপত্র যুদ্ধের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে আরও প্রমাণ হাজির করবে। একইসঙ্গে সাদ্দাম হোসেনের শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারেও জানা যাবে। ‘অনাকাক্সিত’ রাজনীতিকদের গুপ্তহত্যা ও এর শিকার ইরাকি মানুষজনের ব্যাপারেও জানা যাবে। এটা উল্লেখ করলেই যথেষ্ট হবে যে, ইরাকে গণবিধ্বংসী অস্ত্র আছে এমন অজুহাতে ২০০৩ সালে ইরাকে আক্রমণ চালানো হয়েছে। যদিও কখনোই ইরাকে এরকম অস্ত্র পাওয়া যায়নি। এতেই প্রমাণ হচ্ছে, ওই আক্রমণ ছিলো বেআইনী এবং যুক্তরাষ্ট্রের করদাতাদের এ ব্যাপারে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছিলো।
আজ বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছেছে, যখন সব তথ্যই একদিন অনিবার্যভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়বে। একইসঙ্গে যে সব রাজনীতিবিদ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ভুল তথ্যের ওপর নির্ভর করেছেন অথবা ধোঁকা দেওয়ার মতো তথ্যের দিকে চোখ বন্ধ করে রেখেছেন তারাও এর মুখোমুখি হবেন। উইকিলিকস প্রকাশনা এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করবে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১০