ফিনিক্স: যুক্তরাষ্ট্রে অ্যারিজোনার কেন্দ্রীয় আদালত রাজ্যটির নতুন অভিবাসন আইনের বিতর্কিত অংশগুলো স্থগিতের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আইনটি কার্যকর হওয়ার একদিন আগেই বুধবার আদালত এ রায় দেন।
স্থগিত হওয়া ওই অভিবাসন আইনে অ্যারিজোনা রাজ্যের পুলিশকে যেকোন ধরনের অপরাধের জন্য সন্দেহভাজন যেকোন ব্যক্তির অভিবাসনের বৈধতা যাচাই করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নতুন এ আইন অনুযায়ী, অভিবাসন বিষয়ক কাগজপত্র সঙ্গে না রাখাও অপরাধের শামিল বলে বিবেচিত হবে।
বিচারক সুসান বল্টন জানান, বিষয়টা “বৈধ অভিবাসীদের আইনী ঝামেলায় ফেলতে পারে। ” তিনি আরও বলেন, ওই আইনের জটিলতার আশ্রয় নিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা বেআইনীভাবে বৈধ অধিবাসীদের গ্রেপ্তার করতে পারে এবং এধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা প্রবল।
তবে অ্যারিজোনার কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, মেক্সিকো সীমান্তের নিরাপত্তা দিতে ওবামা সরকার ব্যর্থ হয়েছে। রাজ্যে অবৈধ অভিবাসী বেড়ে গিয়েছে বলেও তাঁরা মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, অ্যারিজোনার গভর্নর জ্যান ব্রুয়ার গত এপ্রিলে অভিবাসন বিলটিতে স্বাক্ষর করে আইনে রূপান্তর করেন। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। এমনকি প্রয়োজনে তিনি বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাবেন বলেও জানান।
তবে নাগরিক অধিকারবিষয়ক সংগঠনগুলো ক্ষমতাসীন দলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। অ্যারিজোনা আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের পরিচালক আলেসান্দ্রা সোলের মিটজে বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্ত অ্যারিজোনার নাগরিকদের অতিরিক্ত আইনী ঝামেলা ও বৈষম্যমূলক হয়রানি থেকে রক্ষা করবে। ”
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা অ্যারিজোনার অভিবাসন আইনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এটি ‘ভুল পথে পরিচালিত’ বলে মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে তিনি আইন মন্ত্রণালয়কে বিষয়টির বৈধতা যাচাইয়ের নির্দেশ দেন।
‘সোমোস আমেরিকা’ নামের একটি অভিবাসী অধিকার বিষয়ক সংগঠনের কর্মী লিডিয়া গুজম্যান বলেন, এ রায়ের পর তিনি এখন নিজেকে বৈধ নাগরিক মনে করছেন। আইনটির বিরোধীদের মতে, এ আইন বর্ণবিরোধী এবং এর ফলে রাস্তাঘাটে লোকজন শুধুমাত্র তাঁদের চেহারার কারণে পুলিশী হয়রানির শিকার হতে পারে।
সাম্প্রতিক মতামত জরীপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ শতাংশ মানুষ অ্যারিজোনার অভিবাসন আইন সমর্থন করে। অ্যারিজোনার মোট জনসংখ্যা ৬৬ লাখ। এর এক-তৃতীয়াংশই বিদেশি বংশোদ্ভূত। অ্যারিজোনা রাজ্যে আনুমানিক চার লাখ ৬০ হাজার অভিবাসী অবৈধভাবে বসবাস করেন। এদের বেশিরভাগই মেক্সিকোর নাগরিক।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১২৪১ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১০