পেশোয়ার: পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও কাশ্মিরে মুষলধারে বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ৩২০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গৃহহীন হয়েছেন আরও তিন লাখ মানুষ।
বন্যা কবলিত অঞ্চলগুলোতে শত শত ঘরবাড়ি ও হাজার হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হয়েছে। উদ্ধার কাজে সহায়তার জন্য সামরিক বাহিনী পাঠানো হয়েছে।
পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় দাতব্য প্রতিষ্ঠান এধি ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র আনোয়ার কাজমি বলেন, “পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও পাকিস্তান শাসিত কাশ্মিরে আমরা এ পর্যন্ত ৩২৫ জনের নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি। ”
তিনি বলেন, “নিহততের সঠিত সংখ্যা আমরা এখনো পায়নি। আশঙ্কা করছি, নিহতের সংখ্যা বেড়ে যাবে। ” কাজিম আরও বলেন, “খায়বার পখতুনখোয়া প্রদেশে সরকারি কর্মকর্তারা ৩০০টারও বেশি মৃতদেহ পেয়েছে। ”
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, পাকিস্তান ও চীনকে সংযোগকারী কারাকোরান মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগে, শাংলা অঞ্চলে মহাসড়কটির একটি সেতু প্লাবিত হয়ে ধসে যায়। এর ফলে দেশটির গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
এর আগে, কর্মকর্তারা জানান, খায়বার পখতুনখোয়া প্রদেশে তিন দিনে অন্তত ১৪১ জন নিহত হয়েছে। এই অঞ্চলের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ বলে জানা গেছে। ওই প্রদেশের প্রবীণ মন্ত্রী বশির আহমেদ বিলোর বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, “খায়বার পখতুনখোয়া প্রদেশে মোট ১৩৬ জন নিহত হয়েছে। ” বিলোর এ মুহূর্তে পেশোয়ারের বন্যা কবলিত অঞ্চলে পরিদর্শনে রয়েছেন।
এদিকে, পুলিশ জানায়, শুক্রবার পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছেন।
কাশ্মিরের আঞ্চলিক প্রধানমন্ত্রী সরদার আতিক আহমেদ জানান, বৃহস্পতিবার পাকিস্তান শাসিত কাশ্মিরে ঘরবাড়ি ধসে গিয়ে ২২ জন নিহত হয়েছেন।
সোয়াত অঞ্চলে বহুসংখ্যক সেতু ভেসে গিয়ে ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়ে সম্পূর্ন এলাকাটিই একরকম বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
বিলোর বলেন, “বৃষ্টির কারণে হেলিকপ্টার উড্ডয়নে বিঘœ ঘটায় আমাদের উদ্ধার কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ” শুধুমাত্র পেশোওয়ারেই ৩০ হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন বলে জানান বিলোর। তিনি আরো বলেন, ঘরবাড়ি ভেঙে গিয়ে আর প্রবল স্রোতের কারণেই অধিকাংশ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়, পানিতে আটকে থাকা লোকজনকে উদ্ধার করার জন্য বহুসংখ্যক ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং সেনা প্রকৌশলী পাঠানো হয়েছে। তাঁরা সড়কগুলিকে চলাচলের উপযুক্ত করা এবং পানিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১০