শনিবার (১১ নভেম্বর) দেশটির রাজধানী নাইপিদোর একটি আদালত বিদেশি দুই সাংবাদিকের সাজা ঘোষণা করে।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- তুরস্কের রাষ্ট্রীয় প্রচারমাধ্যম টার্কিশ রেডিও ও টেলিভিশন করপোরেশনের ক্যামেরা পারসন লাউ হন মেং এবং প্রতিবেদক মক চাই লিন।
গত ২৩ অক্টোবর তাদের আটক করা হয়। নাইপিদোতে দেশটির পার্লামেন্টের কাছে হেলিকপ্টার থেকে ড্রোন দিয়ে ডকুমেন্টারির জন্য ছবি তোলার সময় দুই সাংবাদিকের সঙ্গে পুলিশের হাতে আটক হন স্থানীয় দোভাষী অং নাইং সোয়ে ও হ্লা থিও।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, আটক চারজনের কেউ-ই তুরস্কের নাগরিক নন। তবে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারের রাখাইনে মুসলিম রোহিঙ্গাদের ‘গণহত্যা’ চালানোর জন্য দেশটির সৈন্যবাহিনীকে দোষারোপ করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট তায়িপ এরদোগান।
প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে দেশটির পুলিশ প্রতিবেদনে জানায়, দুই বিদেশি সাংবাদিক দেশটির আমদানি-রফতানি আইন লঙ্ঘন করেছেন। এজন্য তাদের তিন বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
কিন্তু বিচারক ১৯৩৪ সালের বার্মা এয়ার ক্র্যাফট (সংশোধনী) আইন অনুযায়ী দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। এ আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তিন মাসের সাজার বিধান রয়েছে।
পরে ক্যামেরা পারসন ও প্রতিবেদককে এ আইনে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের প্রত্যেককে দুই মাসের করে কারাদণ্ড দেন আদালত।
আর দেশটির আমদানি-রফতানি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে নতুন করে ফের ১৬ নভেম্বর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এ বিষয়ে মামলার কৌশলী খিন মং জাও বলেন, ‘আটকরা স্বীকার করেছেন যে, তারা অপরাধ করেছেন। আশা করেছিলাম-এ জন্য দুই বিদেশি সাংবাদিকের শুধু জরিমানা করা হবে। তাদের দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি বেশ মর্মাহত করেছে। ’
সাজা কমিয়ে শুধু জরিমানার জন্য আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
এর আগে শুনানি শুরুর আগে আটক প্রতিবেদক মক সাংবাদিকদের বলেন, ‘মিয়ানমারের আইনের প্রতি যেকোনো অসম্মানের জন্য আমরা আদালতের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। তবে আইনি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতার অভাব ছিল। ’
তিনি বলেন, কী ঘটতে চলেছে এ বিষয়ে আমাদের কোনো ধারণা নেই। আমরা আমাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার জন্য কোনো অনুমতি পাচ্ছি না।
‘এমনকি আইন ও মামলার কার্যাবলী আমাদের ব্যাখ্যা করা হচ্ছে না। বার্মিজ ভাষায় লিখিত একটি বিবৃতিতে আমাদের স্বাক্ষর করতে বলা হয় কিন্তু আমরা এর কিছুই বুঝতে পারিনি। ’
রাখাইনে সৈনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার অভিযোগে ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে রোহিঙ্গা জঙ্গি ধরতে অভিযান শুরু করে মিয়ানমার বাহিনী।
এরপর ওইদিন থেকেই নাফ নদী পেরিয়ে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশে রোহিঙ্গা ঢল নামে। নতুন করে রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে গেছে। তবে ঢল কমলেও এখনও প্রতিদিনই আসছে রোহিঙ্গারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১১, ২০১৭
এমএ/