ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

‘সৌদি ছাড়লেই প্রাণ হারাতে পারেন ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
‘সৌদি ছাড়লেই প্রাণ হারাতে পারেন ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট’ আবদ-রাব্বু মনসুর হাদী

এবার ইয়েমেনের আরেক কর্মকর্তা দাবি করেছেন, সৌদি আরব ছেড়ে গৃহযুদ্ধ বিধ্বস্ত স্বদেশে ফিরতে চাইলে প্রাণ হারাতে পারেন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদ-রাব্বু মনসুর হাদী। ক’দিন আগে দেশটিরই কয়েকজন কর্মকর্তা বলেছিলেন, হাদীকে ‘গৃহবন্দি দশায়’ রেখেছে রিয়াদ কর্তৃপক্ষ। ওই কর্মকর্তা এমন অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সঙ্গে কথা বলছিলেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা ৭২ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট হাদীকে তার অনুগত প্রশাসনের কথিত দখলে থাকা উপকূলীয় শহর অ্যাডেনে যেতেও বারণ করেন।

গত সপ্তাহে হাদী সরকারেরই কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, প্রেসিডেন্ট হাদী তার ছেলে, কয়েকজন মন্ত্রী-সামরিক কর্মকর্তাসহ সৌদি আরবে ‘গৃহবন্দি দশা’য় রয়েছেন। স্বদেশে ফিরতে চাইলেও পাসপোর্ট কেড়ে নিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের।

এই অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যা আখ্যা দিয়ে ওই কর্মকর্তা আল জাজিরাকে বলেন, ‘হাদী গৃহবন্দি রয়েছেন বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা নির্ভেজাল জঞ্জাল। হাদী যে কোনো সময় যে কোথাও যেতে পারেন। এমনকি তিনি বিদেশেও যেতে পারেন। কিন্তু আমি যেটা বুঝি, দেশে ফেরাটা হবে হাদীর জীবনের জন্য সত্যিকারের ঝুঁকির। ’

আরব বসন্তের জেরে রাজনৈতিক সমীকরণের পরিণতিতে ইয়েমেনে ২০১৫ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে বেশিরভাগ সময় ধরেই সৌদির রাজধানী রিয়াদে থাকছেন হাদী। শিয়াপন্থি হুথি বিদ্রোহীদের ‘সশস্ত্র অভ্যুত্থানে’ দেশ ছেড়ে রিয়াদে চলে যান ২০১২ সাল থেকে দায়িত্বরত সুন্নিপন্থি এ রাজনীতিক।

ওই কর্মকর্তা মনে করেন সৌদি কর্তৃপক্ষও হাদীর জীবন নিয়ে শঙ্কিত। তিনি বলেন, ‘এখানে এমন বাহিনী রয়েছে যারা হাদীকে টার্গেট হিসেবে দেখতে চায়। সেজন্য সৌদি কর্তৃপক্ষ মনে করে না, স্বদেশে ফেরাটা তার জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত। সেজন্যই তাকে বলা হয়েছে, যেন নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট রিয়াদেই থাকেন। ’

কোন বাহিনী হাদীকে ‘টার্গেট’ বানাতে চায়, সে বিষয়ে ওই কর্মকর্তা কিছু না বললেও অ্যাডেনসহ ইয়েমেনের দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল সংযুক্ত আরব আমিরাতের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে সক্রিয় আবুধাবির মদদপুষ্ট মিলিশিয়ারাও। আর মধ্য-উত্তরাঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করছে হাদীকে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে উৎখাত করা ইরানের সমর্থনপুষ্ট হুথি বিদ্রোহীরা।

সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব আমিরাত হাদীর সরকারের পক্ষে ইয়েমেনের যুদ্ধে জড়ালেও কিছু কিছু বিশ্লেষক মনে করেন, হাদীর দল ইসলাহ পার্টির সঙ্গে মিশরের নিষিদ্ধঘোষিত মুসলিম ব্রাদারহুডের যোগাযোগ রয়েছে বলে মনে করে আবুধাবি। সেজন্য আরব আমিরাত ইয়েমেনি প্রেসিডেন্টের পদক্ষেপকে ‘নির্ভেজাল’ মনে করে না। আর এই দ্বন্দ্ব থেকে আরব আমিরাতের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা মন্ত্রীদের নিজের সরকার থেকে বিতাড়িত করতে হাদী চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এতোসব হিসাব-নিকাশের মধ্যে এক সপ্তহের মধ্যে খোদ হাদীর সরকারের কর্মকর্তাদেরই বিপরীতমুখী বক্তব্য তার অবস্থানকে আরও নড়বড়ে প্রমাণ করেছে বলে মনে হচ্ছে পর্যবেক্ষকদের।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৭
এইচএ

** সৌদিতে গৃহবন্দি ইয়েমেনি প্রেসিডেন্ট হাদী?

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।