ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মালদ্বীপের পার্লামেন্ট ঘিরে রেখেছে সৈন্যরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৮
মালদ্বীপের পার্লামেন্ট ঘিরে রেখেছে সৈন্যরা মালদ্বীপের পার্লামেন্ট। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের পার্লামেন্ট ঘিরে রেখেছে সৈন্যরা। তারা বিরোধী দলীয় পার্লামেন্ট সদস্যদের পার্লামেন্ট ভবনে এমনকি এর চত্বরে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
এছাড়া দেশে ফেরা দুই সংসদ সদস্যকে বিমানবন্দর  থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার সকালে কোনো কারণ না দেখিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল আহমেদ মোহাম্মদ পদত্যাগ করার পরপরই সেনাবাহিনী পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে অবস্থান নেয়। দেশটিতে ক্যু চলছে কিনা এ মুহূর্তে তা স্পষ্ট নয়।

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, নিরাপত্তার কারণে ২০১৮ সালের প্রথম পার্লামেন্ট অধিবেশনটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বাতিল করার পরপরই অ্যাটর্নি জেনারেল রোববার নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর আকস্মিক ঘোষণাটি দেন। কাল সোমবার চলতি বছরের প্রথম অধিবেশনটি অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল।  

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে গ্রেফতার এবং স্বেচ্ছানির্বাসিত সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদের দেশের ফেরার সব বাধা প্রত্যাহার করা সহ সব বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে আদেশ দেয়। এর পরপরই দেশটিতে নতুন করে রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও চরম বিশৃঙ্খলার সূচনা হয়।

পুলিশ ও সেনাবাহিনী সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অমান্য করার ঘোষণা দেয়। তারা জানায়, সুপ্রিম কোর্টের এহেন আদেশ তারা মানবে না।

পুলিশ জানায়, তারা প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিনকে গ্রেফতার করবে না।  

পুলিশ ও সেনাবাহিনীর এহেন অনাকাঙ্ক্ষিত ভূমিকার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের উস্কানিই অনেকাংশে দায়ী। তিনি সুপ্রিম কোর্টের আদেশকে 'অসাংবিধানিক' বলে আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, প্রেসিডেন্টকে গ্রেফতার করার যে আদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী তা অগ্রাহ্য করবে।  

এক দিকে ঘনীভূত রাজনৈতিক সংকট অন্যদিকে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী ও পুলিশের প্রকাশ্য অবস্থান দেশটিকে বড় ধরনের অনিশ্চয়তার আবর্তে ঠেলে দিল। যা হবে গভীর ও দীর্ঘমেয়াদি।  

রোববার অ্যাটর্নি জেনারেলের আকস্মিক পদত্যাগের ঘোষণা এবং পার্লামেন্ট ভবন ঘিরে সেনাবাহিনীর জওয়ানদের অবস্থান নেবার পর দেশে ফেরা দুজন সংসদ সদস্যকে বিমানবন্দরে আটকের ঘটনায় সংকট আরো এক দফা ঘনীভূত হলো।

অ্যাটর্নি জেনারেল আহমেদ মোহাম্মদ পদত্যাগ করার আকস্মিক ঘোষণা দেবার পরপরই সকালে বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যরা দলে দলে পার্লামেন্ট ভবনের সামনে জড়ো হতে থাকেন। এ সময় সেনা সদস্যরা তাদের পার্লামেন্ট চত্বরে প্রবেশে বাধা দেয়। তবে কিছু সদস্যকে ভেতরে যেতে দেয়া হলেও অন্য সবাইকে বাধা দেওয়া হয়। বাধা পেয়ে অনেক সংসদ সদস্য জোরপূর্বক পার্লামেন্ট চত্বরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় মারমুখি সেনাদের সঙ্গে তাদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। সেনারা এসময় সংসদ সদস্যদের চোখে মরিচের গুঁড়া ছুড়ে মারে।  

যে দুজন সংসদ সদস্যকে আটক করা হয়েছে তারা হলেন আবদুল্লাহ সিনান ও ইলহাম আহমেদ। পুলিশ বলছে, ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে তাদের নামে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে বলেই এদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবারের আদেশে সুপ্রিম কোর্ট যে ১২ জন সংসদ সদস্যকে তাদের স্বপদে বহাল করার আদেশ জারি করেছিলেন গ্রেফতার হওয়া দুজন তাদের মধ্যে আছেন। পদ ফিরে পাওয়ার বদলে তারা উল্টো গ্রেফতার হলেন।

মালদ্বীপের পার্লামেন্টে এ মুহূর্তে বিরোধী দলীয় সদস্যরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সে কারণে পার্লামেন্ট অধিবেশন বসলে সরকারের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।

মালদ্বীপের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল আহমেদ সিয়াম মালের সেনা সদর দপ্তরে একটি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। যাতে বলা হয়, ‘বৈধ সরকারের সুরক্ষা দিতে’ তারা সবাই প্রয়োজনে ‘জীবন বিসর্জন দিতে প্রস্তুত’। দুপুর বেলা শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৮/ আপডেট ১৮১২ ঘণ্টা

জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।