বুধবার (১৬ অক্টোবর) সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপদেষ্টা ডেভিড প্লোয়ুফি’র সঙ্গে এক সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা হিলারি একথা বলেন। বিগত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার আগে তিনি ওবামা প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন।
২০২০ সালের নির্বাচনকে ঘিরে ট্রাম্পের প্রচারণা শুরু হলেও হিলারি অংশ নেবেন কি-না, সে বিষয়টি এখনো পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। তবে তিনি কোথাও অনাগ্রহও প্রকাশ করেননি।
নিজেকে আসন্ন নির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ না করলেও হিলারি বলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাথমিক লড়াইয়ে অংশ নেবেন এমন একজনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহারে কারসাজি করছে রাশিয়া।
তার মতে, ক্রেমলিন (রুশ প্রেসিডেন্টের বাসভবন ও কার্যালয়) চাইছে তৃতীয় প্রার্থী দাঁড় করিয়ে ‘নিরপেক্ষ ভোট’গুলো বিভাজিত করে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করার পথ সুগম করতে।
হিলারি সরাসরি কারও নাম না নিলেও তার বক্তব্য হাওয়াই আসনের কংগ্রেসওম্যান তুলসি গ্যাবার্ডকেই ইঙ্গিত করছে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে তুলসি মনোনয়নপ্রত্যাশী হতে পারেন বলে বিভিন্ন পরিসরে আলোচনা শুরু হয়েছে। টুইটারে বিভিন্ন ইস্যুতে তিনিও বেশ সক্রিয়। কিছুক্ষেত্রে হিলারিকে ইঙ্গিত করে তার বিরোধীমতও প্রকাশ পাচ্ছে।
হিলারি বলেন, ওই প্রার্থী রাশিয়ার সমর্থন পাচ্ছেন। দেশটি বিভিন্নভাবে তাকে সাহায্য করে যাচ্ছে।
তবে হিলারি নাম না বললেও এর জবাব দিতে কোনো রাখঢাক করেননি তুলসি। শনিবার (১৯ অক্টোবর) এক টুইটে তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, হিলারি তার সুনাম নষ্ট করতে চাইছেন। তিনি হিলারিকে ‘প্ররোচক-দুর্নীতিবাজ’ অভিহিত করে অভিযোগ করেন, হিলারি ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছেন।
তিনি বলেন, আমি নির্বাচনে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই তিনি (হিলারি) আমার সুনাম নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছেন।
‘অন্য প্রার্থীর আড়ালে না লুকিয়ে’ সরাসরি নির্বাচনে দাঁড়াতেও হিলারিকে আহ্বান জানান তুলসি।
অবশ্য হিলারি কেবল তুলসিকেই ইঙ্গিত করছেন না, রাশিয়ার ‘দাঁড় করানো’ প্রার্থী হিসেবে তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া গ্রিন পার্টির জিল স্টেইনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন। স্টেইনকে ‘রাশিয়ার অ্যাসেট’ উল্লেখ করে হিলারি বলেছেন, তিনিও আবার ‘তৃতীয় পক্ষের’ প্রার্থী হতে পারেন এবারের নির্বাচনে।
স্টেইন ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রায় ১৫ লাখ ভোট পেয়েছিলেন, যা ‘নিরপেক্ষ ভোট’গুলোকে বিভাজিত করার ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিল বলে মনে করা হয়।
রাশিয়ার ‘অনুকম্পায়’ ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার অভিযোগ ছড়ানোর পর থেকেই ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতারা নির্বাচন ঘিরে মস্কোকে ‘সন্দেহের বৃত্তে’ ফেলছেন। সেই সন্দেহের কথাবার্তায় এবার হিলারি জড়িয়ে ফেললেন তার দলের রাজনীতিক তুলসিকেও।
দেশটির অনেক রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্রীয় সংস্থাও গত নির্বাচনে রাশিয়ার কারসাজির অভিযোগ তুলেছে। সেজন্য বেশ কিছু বিভাগ ও সংস্থা তদন্তও করছে।
মার্কিন আইনবিভাগের বিশেষ উপদেষ্টা রবার্ট মুলারের এক তদন্তেও বলা হয়, রাশিয়ার সরকার ও এর সহযোগী সংস্থার বিশেষ ভূমিকা ছিল বিগত নির্বাচনে। যার প্রভাব ছিল প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার ক্ষেত্রে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৯, ২০১৯
এফএম/এইচএ