‘পিকক জেনারেশন’ নামে ওই গ্রুপের এ পাঁচ কবিকে গত এপ্রিলে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারা ‘থাংগ্যাত’ নামে একটি পরিবেশনার মাধ্যমে সেনাবাহিনীকে ব্যঙ্গ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয় এবং এই অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
থাংগ্যাত এমন এক পরিবেশনা- যাতে কবিতা, কৌতুক ও নৃত্যের সমন্বয় থাকে। এই পরিবেশনা ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করায় কাব্যদলটির আরও তিন সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইয়াঙ্গুনের আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত এ পাঁচ কবি হলেন- কায় খাইন তুন, জায় ইয়ার লুইন, পাইং পিও মিন, পাইং ইয়ে থু ও জাও লিন হতুত।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ওই কাব্যদল তাদের পরিবেশনায় মিয়ানমারের সংসদে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ এবং ক্ষমতা ভাগাভাগির সমালোচনা করে। এমনকি সামরিক পোশাক পরিহিত এক কুকুরের ছবিও দেখায় দর্শকদের।
রায় ঘোষণাকালে বিচারক তুন কিয়াও বলেন, এটা যে উদ্দেশ্যহীন ছিল না, তা জনসম্মুখে তাদের পরিবেশনার শব্দগুচ্ছেই বোজা যায়। সুতরাং তারা দোষী প্রমাণিত।
যদিও দণ্ডিত পাঁচজনই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রায় ঘোষণার পর জায় ইয়ার লুইন সাংবাদিকদের বলেন, আমি বিচার বিভাগের কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দিচ্ছি না, সেটা হোক একদিন বা এক বছরের, তাতে কিছু যায় আসে না।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করলে কারাগারে নিক্ষেপে ক্ষমতা প্রয়োগ বাড়িয়েই চলেছে মিয়ানমার সরকার। এই রোষে যারা পড়ছেন, তাদের মধ্যে সাংবাদিক, শিল্পীসহ ভিন্নতাবলম্বীরা বেশি।
মিয়ানমারে এখন নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী অং সান সু কি’র নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকার ক্ষমতায়। তবে পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যে, পাঁচ দশক ধরে চলা সামরিক শাসনকালের দমনমূলক আইনগুলো সামান্যই বদলাতে পেরেছে সু কি’র বেসামরিক সরকার।
এদিকে, ‘পিকক জেনারেশনের’ পাঁচ কবির বিরুদ্ধে দেওয়া রায়কে ‘সাংঘাতিক’ বলে আখ্যা দিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
সংস্থাটির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গবেষণা পরিচালক জোয়ান ম্যারিনার এক বিবৃতিতে বলেন, ব্যঙ্গধর্মী পরিবেশনার কারণে লোকজনকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। এতেই বোঝা যায় মিয়ানমারে বাকস্বাধীনতার কী নাজুক অবস্থা।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩১, ২০১৯
এইচএ/