জাতিসংঘের ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) জানিয়েছে, উদ্বেগজনক হারে বাতাসে বিষের বোঝা বেড়ে চলেছে। প্রতি মুহূর্তে।
তাপমাত্রাবৃদ্ধিকে যে সীমার মধ্যে বেঁধে রাখতে না পারলে আর ৬০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে পৃথিবী মানুষের বসবাসের প্রায় অযোগ্য হয়ে উঠবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আইপিসিসি।
উষ্ণায়নের ফলে জলবায়ু দ্রুত বদলে যাচ্ছে, বদলে যাবে, ৩০ বছরের মধ্যে আর তার ভয়াবহ প্রভাব পড়তে পারে মানব সভ্যতার ওপর।
গ্লোবাল কার্বন প্রজেক্ট বোর্ডের সদস্য জলবায়ু বিশেষজ্ঞ অরুণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, উষ্ণায়নের জন্যই দ্রুত গলে যাচ্ছে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর বরফের পুরু চাঙর। আর মানুষের দোষে বাতাসে বিষাক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের বোঝা উত্তরোত্তর বাড়ছে। শিল্প, কল-কারখানার উগরে দেওয়া কার্বন ডাই-অক্সাইড ফি-বছর বাতাসে বিষের বোঝা বাড়িয়ে চলেছে তা-ও অজ্ঞাত নয়। কিন্তু এ কথা এত দিন সকলের জানা ছিল না, প্রতি বছর প্রতি মাসে প্রতি দিন প্রতি ঘণ্টায় প্রতি মিনিটে প্রতি সেকেন্ডে কী পরিমাণ বিষের বোঝায় অবসন্ন হয়ে পড়ছে আমাদের শ্বাসের বাতাস। যা পৃথিবীকে উষ্ণ থেকে উষ্ণতর করে তুলছে।
অরুণ বলেছেন, ২০১৯ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর বাতাসে বিষের বোঝা বাড়ছিল উত্তরোত্তর। তবে কোভিড সংক্রমণ রুখতে দীর্ঘ দিন ধরে দেশে দেশে লকডাউন চলায়, শিল্প, কল-কারখানা দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় ২০১৯-এর শেষ থেকে চলতি বছরের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত সেই বিষের বোঝা কিছুটা কম হয়েছিল। কিন্তু তারপর সভ্যতা ধীরে ধীরে স্বাভাবিকতায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই সেই বোঝা আবার বাড়তে শুরু করে দিয়েছে। তার ফলে এই মাসে (নভেম্বর, ২০২১) পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা প্রাক্-শিল্পযুগের চেয়ে বেড়ে ১.২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে গেছে।
২০২১ সালে বাতাসে আবার গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে।
দেখা গিয়েছে শিল্প, কল-কারখানা ফের খুলে যাওয়ার জন্য ২০২০ সালের চেয়ে এ বছর বাতাসে কার্বন ডাই-অক্সাইড-সহ বিভিন্ন গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমনের মাত্রা ৪.৯ শতাংশ বাড়তে চলেছে। যা ২০১৯ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৫.৪ শতাংশ কমে গিয়েছিল। ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের তথ্য জানিয়েছে, এখনই যদি সেই নির্গমন নিয়ন্ত্রণে আনার ব্যবস্থা দেশগুলো না নেয়, তাহলে প্রতি বছর পৃথিবীর বাতাসে অন্তত ২০ কোটি টন করে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাসের বোঝা বাড়াবে শিল্প, কল-কারখানাগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ১০০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯ , ২০২১
এসআইএস