নয়াদিল্লি: দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে হেরোইনের সবচেয়ে বড় ভোক্তা ভারত। এই অঞ্চলে হেরোইনের বাৎসরিক উৎপাদন ৪০ টন।
জাতিসংঘের মাদকদ্রব্য বিষয়ে ২০১১ সালের প্রতিবেদনে এ তথ্য দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান থেকে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে হেরোইন পাচারের জন্য মাদক চোরাকারবারিদের শুধু ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয় ভারত- এমন ধারণা ভুল। ভারত এখন মাদকের বড় ভোক্তা দেশও।
ভারত নিজে হেরোইনের ভোক্তা দেশই নয় পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশ ও নেপালে এই মাদক সরবরাহের বড় উৎসও। আর শ্রীলঙ্কায় বছরে যে পরিমাণ হেরোইন সেবন করা হয় তার অর্ধেকই সরবরাহ করে ভারত। এই দ্বীপ দেশটির বাকি চাহিদা পূরণ হয় পাকিস্তানের ভেতর দিয়ে পাচার হয়ে আসা হেরোইনে।
ইন্টারন্যাশনাল নারকোটিকস কন্ট্রোল বোর্ড (আইএনসিবি) তাদের ২০১১ সালের বার্ষিক প্রদিবেদন প্রকাশের সময় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ওপিএস মালিক জানিয়েছেন, উত্তর এবং পশ্চিম ভারতের বিভিন্ন শহরে উঠতি বয়সের শিক্ষার্থীরাই হেরোইনের মতো মাদকের সবচে বড় ভোক্তা।
এছাড়া ভারতের শহর-নগরে ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কোকেনের চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। গত বছর মুম্বাইয়ে প্রায় ২৩ কেজি কোকেন জব্দ করা হয় যা মোট ভোগের তুলনায় নগণ্য।
জাতিসংঘের সংস্থা আইএনসিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে মোট উৎপাদিত ৪০ টন হেরোইনের ১৫ টনই পাচার হয় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আফ্রিকা, উত্তর আমেরিকা, চীন এবং ইউরোপে। বাকি হেরোইন এই অঞ্চলেই ভোগ করা হয় যার অধিকাংশই হয় ভারতে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ভারতে প্রায় ৩০ লাখ মানুষ আফিম আসক্ত। এছাড়া এখানে বছরে যে ১৭ টন হেরোইন ভোগ করা হয় তার ৮ টনই আফগানিস্তানে উৎপাদিত এবং ৯ টন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এবং প্রস্তুতকৃত।
ভারতে অবৈধভাবে আফিম চাষের বিস্তৃতি নিয়ে প্রতিবেদনে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, এদেশে কমপক্ষে সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে আফিম চাষ করা হয়। ২০১০ সালে প্রায় ১ হাজার ২২ হেক্টর জমিতে অবৈধভাবে চাষ করা আফিম ধ্বংস করেছিল ভারতের মাদক বিরোধী সংস্থা।
এছাড়া ভারতে মাদক হিসেবে ওষুধের অপব্যবহারের দিকটিও বেশ গুরুত্বের সঙ্গে প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
তবে ভারত এই মাদক চোরাচালানির জন্য পার্শ্ববর্তী এবং পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০১২