ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

আদালত চূড়ান্ত সুরাহা না করেই রায় দিয়েছে: ভিকে সিং

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:০৮, মার্চ ৩, ২০১২
আদালত চূড়ান্ত সুরাহা না করেই রায় দিয়েছে: ভিকে সিং

ঢাকা: বয়স বিতর্কে সর্বোচ্চ আদালতে গিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে হেরে গিয়ে ভারতের সেনা প্রধান ভিকে সং অভিযোগ করেছেন, সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টির চূড়ান্ত সুরাহা না করেই তার পদত্যাগের রায় দিয়েছে।

তিনি বলেছেন, ‘এটা বলা হয়ত অসত্য হবে যে, পদত্যাগের জন্য আমি চাপে ছিলাম না।

গণমাধ্যম বিষয়টি যেভাবে তুলে ধরেছে তাতে আমার ঘনিষ্ঠ পরামর্শদাতারাও অনেকটা প্রভাবিত হয়েছেন। আর হ্যাঁ, আমি অত্যন্ত হতাশ হয়েছিলাম যখন দেখলাম, সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টির চূড়ান্ত সুরাহা করল না। ’

আউটলুক সায়িকীতে দেওয়া সাক্ষাতকারে এসব কথা বলেছেন ভারতের সেনা প্রধান জেনারেল ভিকে সিং।

তিনি আরো বলেছেন, ‘সেনা প্রধান হিসেবে সেনা বাহিনী এবং এর লোকদের প্রতি আমার দায়িত্ব আাছে। আর নিজের জন্য রেখে দেওয়া অসম্পূর্ণ কাজ আমাকে শেষ করতেই হবে। আমি যা শুরু করেছি তা শেষ না করা পর্যন্ত তো ছেড়ে যেতে পারি না। প্রতিষ্ঠানের স্বার্থই সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার পাবে। ’

তিনি বলেন, অনেকে বিষয়টাকে সাধারণ সামরিক-বেসামরিক টানাপোড়েন হিসেবে ব্যাখ্যা করছেন। জেনারেল কেএস ঠিমায়ার আগাম অবসরের সঙ্গে সমান্তরালভাবে বিষয়টা দেখতে চাচ্ছেন অনেকে।

মূল বিষয়টি সামনে না এনে আদালতের নির্দেশ আরো বেশি বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে বলে দাবি করেন ভিকে সিং। আদালত সংবিধিবদ্ধ আপত্তি নিয়ে কথা বলেছে যা দুই অংশে ভাগ করা যায়- একদিকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া এবং অপরপক্ষে বিষয়টির রক্ষণাবেক্ষণ সক্ষমতা।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, যেহেতু তাদের সিদ্ধান্ত আমার জন্মসাল ১৯৫০ সালই হবে সেহেতু তা অবশ্যই আমাকে মানতে হবে। কিন্তু এমন কথা তো স্বাভাবিক ন্যায় বিচারের নীতির বিরুদ্ধে যায়।

বয়স বিতর্ক নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আদালতে গেলেন এর পর আদালত আপনার বিরুদ্ধে রায় দিল- এ বিষয়টি আপনার ওপর কেমন প্রভাব ফেলেছে? এ প্রশ্নে ভিকে সিং বলেন, এটা একটা অদ্ভুত পরিস্থিতি।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি যখন আদলত রায় ঘোষণা করে তখন গণমাধ্যম তা প্রকাশ করেনি বলেও অভিযোগ করেন ভিকে সিং। তিনি বলেন, এতে সবাই এর গুরুত্ব বুঝতে পারেনি। এটা একটা অকার্যকর রায় বলে অভিহিত করেছেন তিনি। পরে বিষয়টির সংবাদ পরিবশেনে গণমাধ্যম বাড়াবাড়ি করেছে বলেও অভিযোগ করেন জেনারেল ভিসে সিং।

কিন্তু আদালতের রায়ের পর পিটিশন প্রত্যাহার করার কারণে অনেকে মনে করেছে আপনি রায়ে সন্তুষ্ট- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত ৩০ ডিসেম্বর সর্বশেষ বিধিসম্মতভাবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে আপত্তি জানান তিনি। পরে তিনি আদালতে গিয়েছিলেন।

তিনি জানান, ৩ ফেব্রুয়ারি আদালত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চায় এবং পরে বলে প্রতিরক্ষা দপ্তরের সিদ্ধান্ত সাধারণ ন্যায় বিচারের নীতির বিরুদ্ধে গেছে।

এর পর ১০ ফেব্রুয়ারি আমার বিধিসম্মত আপত্তির বিরুদ্ধে দেওয়া প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশ প্রত্যাহার করে নেন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং পরোক্ষভাবে স্বীকার করেন আমার আসল জন্মসাল ১৯৫১। আর শুধু রীতির দোহাই দিয়ে এটি মেনে নেয়নি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

সবশেষে হতাশার সঙ্গে তিনি বলেন, বিশেষ করে আদালতের বিচারকরা যখন ইঙ্গিত দিলেন আদালত আমার প্রকৃত জন্মসাল জানার ব্যাপারে আগ্রহী নয় তখন আদালতে আর কী বলার থাকে।

যাইহোক এখন বিষয়টি নিয়ম মাফিক চলতে দেওয়াই উচিত। আর এমন ঘটনা যেনো ভবিষ্যতে না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে বলে  সবার প্রতি আহ্বান জানান জেনারেল ভিকে সিং।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।