নড়াইল: আজ ৪ ডিসেম্বর, একুশে পদক প্রাপ্ত চারণ কবি বিজয় সরকারের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। বার্ধক্যজনিত কারণে ১৯৮৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ভারতে পরলোক গমন করেন কবিয়াল বিজয় সরকার।
পশ্চিমবঙ্গের কেউটিয়ায় তাকে সমাহিত করা হয়। তার দুই ছেলে কাজল অধিকারী, বাদল অধিকারী ও মেয়ে বুলবুলি অধিকারী ভারতে বসবাস করেন।
কবিয়াল বিজয় সরকার ১৯০৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার ডুমদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা নবকৃষ্ণ অধিকারী ও মা হিমালয়া দেবী। বিজয় সরকার নবম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছেন, মতান্তরে মেট্রিক পর্যন্ত। তার দুই স্ত্রী বীণাপানি ও প্রমোদা অধিকারীর কেউ বেঁচে নেই।
বিজয় একাধারে গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। ১৮০০ বেশি গান লিখেছেন তিনি। প্রকৃত নাম বিজয় অধিকারী হলেও সুর, সঙ্গীত ও অসাধারণ গায়কী ঢঙের জন্য ‘সরকার’ উপাধি লাভ করেন।
আধ্যাত্মিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিজয় সরকার গেয়েছেন- যেমন আছে এই পৃথিবী/ তেমনিই ঠিক রবে/ সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে একদিন চলে যেতে হবে...। প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে লিখেছেন-‘তুমি জানো নারে প্রিয়/ তুমি মোর জীবনের সাধনা’...।
‘নবী নামের নৌকা গড়/ আল্লাহ নামের পাল খাটাও/ বিসমিল্লাহ বলিয়া মোমিন/ কূলের তরী খুলে দাও...। ’ কিংবা ‘আল্লাহ রসূল বল মোমিন/ আল্লাহ রসূল বল/ এবার দূরে ফেলে মায়ার বোঝা/ সোজা পথে চল...। ’ স্ত্রী বীনাপাণির মৃত্যুর খবরে গানের আসরেই গেয়েছেন-‘পোষা পাখি উড়ে যাবে সজনী/ ওরে একদিন ভাবি নাই মনে/ সে আমারে ভুলবে কেমনে...’।
এদিকে বিজয় সরকারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ (৪ ডিসেম্বর) জেলা শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে-কবির প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, বিজয়গীতি পরিবেশন, আলোচনা সভা ও কবিগানের আসর রয়েছে। চারণকবি বিজয় সরকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮২৬, ডিসেম্বর ০৪, ২০২২
এমএইচএস