খুলনা: খুলনার খানজাহান আলী থানার আলোচিত মশিয়ালী ট্রিপল মার্ডার হত্যা মামলা দ্রুত বিচার আইনে নিষ্পত্তির দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন ওই এলাকার সন্ত্রাস নির্মূল কমিটি ও সাধারণ মানুষ।
তিন হত্যা মামলার আসামি দ্বারা বাদির বাড়িঘরে আগুন, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনার পরিদর্শক মামুনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি-হয়রানি, আসামিদের একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে মূল ঘটনা ভিন্ন খাতে নেওয়ার প্রতিবাদ এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মো. আফসার শেখ, মো. মকবুল শেখ, মো. আলতাব শেখ, মামলার বাদী শাহিদুল ইসলাম, হাফেজ মো. মাসুম বিল্লাহ, রেজাউল শেখ, বাবুল শেখ, ওলিয়ার শেখ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ২০২০ সালের ১৬ জুলাই রাতে মশিয়ালী গ্রামের গ্রামবাসীর ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে কলেজছাত্র সাইফুল ইসলামসহ তিনজনকে হত্যা করা হয়। এতে জড়িত একাধিক মামলার আসামি জাকারিয়া, জাফরিন, মিলটন ও তার বাহিনী। দুদিন পর ১৮ জুলাই রাতে নিহত সাইফুলের বাবা সাইদুল বাদি হয়ে ২২ জনকে এজাহার নামীয় আসামি করে খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর বিভিন্নস্থান থেকে আসামিদের গ্রেফতার আইনরক্ষাকারী বাহিনী।
তারা আরও বলেন, আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে এসে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে ট্রিপল মার্ডার মামলার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে হয়রানী করছে। খুলনা পিবিআই পরিদর্শক মামুন মশিয়ালী এলাকায় ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে হুমকি-হয়রানী করছে। তার সামনেই আসামিরা আলআমিন শেখ, মান্নান শেখ, আকাশ শেখ, আজাদ শেখ, রেজাউল শেখ, তারেক শেখসহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করে পুলিশের কাছে তুলে দিয়েছে। এমনকি পিবিআই অফিসে নিয়ে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সামনেই মশিয়ালী গ্রামের লোকজনকে মারধর করে তারা।
মামলার বাদি সাইদুল বলেন, মামলাটির আলামত নষ্ট করে, আমাকে ভয় দেখাতে খুলনার পিবিআই কর্মকর্তা মামুনকে মোটা অংকের অর্থ দিয়ে আসামিরা বিভিন্নরকম ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তারা মিথ্যা মামলা করেছে। সেই মামলা খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) ডিবি শাখা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে। তারপরও আমাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, খুলনা পিবিআই ইন্সপেক্টর মাহফুজ আমাদের গ্রামের কয়েকজনকে প্রস্তাব দেয় আমি যেন মামলা তুলে নিই। তাহলে প্রতিপক্ষ আমাদের কোনোভাবে হয়রানী করবে না। আসামিরা আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। বাবা হিসেবে যেখানে সন্তানের লাশ কাঁধে নিতে হলো- সেখানে আমি কীভাবে মামলা তুলে নিতে পারি? গত ২৫ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আসামিরা আমরা বাড়িতে আগুন দেয়। এ ঘটনায় আমি খানজাহান আলী থানায় মামলা দায়ের করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ আসামি শেখ জাকারিয়াকে গ্রেফতার করে। এতে বাকিরা বেপরোয়া হয়ে আমাকে হয়রানী করছে।
মানববন্ধন শেষে ট্রিপল মার্ডার মামলার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও মশিয়ালী সন্ত্রাস নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীনের কাছে স্মারকলিপি দেন।
বিষয়গুলো নিয়ে পিবিআই খুলনার পরিদর্শক মামুনের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২২
এমআরএম/এমজে