ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

রসের হাড়ি রক্ষায় শেকল দিয়ে তালাবন্দি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২, ২০২৩
রসের হাড়ি রক্ষায় শেকল দিয়ে তালাবন্দি রসের হাড়িতে তালা মেরে রাখছেন গাছি দীপক মজুমদার

বরিশাল: চোরের হাত থেকে খেজুর গাছে রসের হাড়ি রক্ষায় শেকল দিয়ে তালাবদ্ধ করেছেন এক গাছি।

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামের বাসিন্দা ও গাছি দীপক মজুমদার এ পদ্ধতি অবলম্বন করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন।

দীপক মজুমদার খেজুর গাছ কেটে কাঁচা রস সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। পাশাপাশি রস দিয়ে গুড় তৈরি করেও বিক্রি করেন। প্রয়াত বাবা দেবেন্দ্র নাথ মজুমদার পেশাকেই বেছে নিয়েছেন দীপক।

হাড়ি তালাবন্ধির বিষয়ে দীপক মজুমদার বলেন, পৌষের মাঝামাঝি থেকে আমি গ্রামের ১৭ টি খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করি। বর্তমানে এক হাড়ি খেজুরের রসের দাম তিনশ টাকা। কিন্তু প্রতি রাতে গাছ থেকে রস চুরি হয়।  

শুধু রসই না, হাড়িও চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। এতে দুইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি বিপাকে পড়েন বলে জানান দীপক।

এই গাছি বলেন, শুধু রস চুরি হলেও অতোটা সমস্যা ছিল না। কিন্তু হাড়িও চুরি করে নিচ্ছে। প্রতিটি হাড়ির দাম ৮০ টাকা। আবার কালো রংয়ের হাড়ি বর্তমানে পাওয়া যায় না।  বর্তমানে বাজারে লাল রঙের যে হাড়ি পাওয়া যায় সেগুলো পূজাতে ব্যবহার হয় বিধায় সবাই সে হাড়ির রস কিনতে চায় না। তাই এখন হাড়ি রক্ষায় শেকল দিয়ে বেঁধে তা তালাবদ্ধ করে রাখছি গাছেই।

তিনি বলেন, দুইটি গাছ খোলা জায়গায় রয়েছে। ওই গাছ দুটি থেকে এ বছর মোট চারটি হাড়ি চুরি হয়েছে। তাই চুরি হওয়া থেকে হাড়ি রক্ষায় ৮০ টাকা দামের দুটি তালা ও ১২৫ টাকা দামের দুটি শেকল কিনেছি। যা এখন প্রতিনিয়ত হাড়ি রক্ষায় ব্যবহার করছি।

শুধু হাড়ি ও রস রক্ষাই নয় বাদুর যাতে রসে মুখ না দিতে পারে সেই চেষ্টাও করে যাচ্ছেন বলে জানালেন দীপক মজুমদার।

তিনি বলেন, বর্তমানে কাঁচা খেজুরের রসে নিপাহ ভাইরাস সংক্রমিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। তাই যারা কাঁচা রস খেতে চায়, তাদের না খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে বাদুর যাতে রস খেতে না পারে সেই চেষ্টাও করছি। জাল দিয়ে হাড়ির মুখ পেঁচিয়ে দিই।  

দীপক বলেন, কাঁচা রস বিক্রি ছাড়াও গুড় তৈরি করে বিক্রি করি। প্রতি কেজি গুড়ের দাম ৫০০ টাকা। আর এ থেকে যে টাকা আয় হয়, তা দিয়েই স্ত্রী কনিকা, ছেলে দিগন্ত ও মেয়ে জয়িতাকে নিয়ে সংসার চালিয়ে নিচ্ছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০২৩
এমএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।