ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নারী হোটেল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার এক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২৩
নারী হোটেল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার এক

দিনাজপুর: দিনাজপুরে প্রকাশ্যে নারী হোটেল কর্মীকে কুপিয়ে হত্যার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আসামি গ্রেপ্তার ও খুনের রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। অনৈতিক সম্পর্ক, টাকা লেনদেন ও বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ওই নারীকে হত্যা করা হয়েছে।

 

রোববার (১ অক্টোবর) দুপুরে দিনাজপুর পুলিশ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আব্দুল্লাহ আল মাসুম।  

এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) জিন্নাহ আল মামুন, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ হোসেন, উপ-পরিদর্শক (এসআই) শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।  

এর আগে শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬টায় জেলার খানসামা উপজেলার পাকেরহাটে মাহিন সুইট হোটেলের ভেতর থেকে আসামি তরিকুল ইসলাম চালুকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।  

গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল দিনাজপুর সদর উপজেলার মুরাদপুর নামপুকুর এলাকার মৃত আশরাফ আলীর পালক ছেলে।  

প্রেস ব্রিফিংয়ে আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, নিহত জয়া বর্মন ও গ্রেপ্তার তরিকুল ইসলাম বাস টার্মিনাল প্রাঙ্গণে সাউদিয়া হোটেলে প্রায় ৬ মাস ধরে কাজ করতেন। দীর্ঘদিন একসঙ্গে কাজ করার কারণে দুইজনের মধ্যে সখ্য গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে জয়া বর্মন তরিকুলের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় টাকা ধার নিতেন। স্বামী সপাল রায় নৈশপ্রহরীর চাকরি করার কারণে জয়া তরিকুলকে নিয়ে তার বাসায় আসতেন। কিছুদিন আগে জয়া বর্মনকে বিয়ের প্রস্তাব দেন তরিকুল। কিন্তু এক সন্তানের জননী জয়া বর্মন তার সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। দীর্ঘদিনের ভালোবাসার পর বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ায় তরিকুলের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরিকল্পনা করেন জয়াকে হত্যার।  

পরে পরিকল্পনা মোতাবেক শহরের মহারাজার মোড়ের কামারের দোকান থেকে ২০০ টাকা দিয়ে একটি ধারালো দা কেনেন তরিকুল। ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরের পর হোটেল থেকে ছুটি নেন তরিকুল। প্রতিদিনের মতো হোটেলের কাজ শেষে সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরছিলেন জয়া। মির্জাপুর বাস টার্মিনাল বিসমিল্লাহ হোটেলের সামনে পৌঁছালে জয়ার ওপর হামলা করেন তরিকুল। ধারালো দায়ের কোপে গুরুতর আহত হন জয়া। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কিছুক্ষণ পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।  

এ ঘটনায় নিহত জয়া বর্মনের স্বামী সপাল রায় বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।  

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত তরিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে আগেও কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত ও একটি মারামারির মামলা রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় দিনাজপুর শহরের মির্জাপুর বাসটার্মিনাল এলাকায় রাস্তায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন হোটেল শ্রমিক জয়া বর্মন। তিনি ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার বনডাঙ্গা গ্রামের সপাল রায়ের স্ত্রী। সপাল রায় দিনাজপুর শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ট্রাক্টর শোরুমের নৈশপ্রহরী হিসেবে কর্মরত। সপাল রায় ও জয়া বর্মন ফকিরপাড়ার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২৩
আরএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।