ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আম্মা আমি ভালো আছি, চিন্তা করো না: সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১১ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৪
আম্মা আমি ভালো আছি, চিন্তা করো না: সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক ইঞ্জিনিয়ার তৌফিকুল ইসলাম

খুলনা: ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি পণ্যবাহী একটি জাহাজ এবং ২৩ নাবিক ও ক্রুকে আটক করেছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। ভুক্তভোগীদের মধ্যে রয়েছেন খুলনা মহানগরীর ছোটবয়রা করীমনগর এলাকার বাসিন্দা তৌফিকুল ইসলাম।

তিনি জিম্মি জাহাজ ‘এমভি আবদুল্লাহ’র সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার। তার বাড়িতেও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।

জানা গেছে, ইঞ্জিনিয়ার তৌফিকুল ইসলামের পরিবারে রয়েছেন বাবা ইকবাল হোসেন, মা বিল আফরোজ, স্ত্রী জোবায়দা নোমান এবং দুই সন্তান তাসফিয়া তাহসিনা (৭) ও আহমেদ রুসাফি (৫)।

মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিকেল ৫টার পরে মা ও স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইলে সবশেষ কথা হয় তৌফিকুল ইসলামের।

বুধবার (১৩ মার্চ) ইঞ্জিনিয়ার তৌফিকুল ইসলামের মা দিল আফরোজ বলেন, ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে। বললো আম্মা আমি ভালো আছি, চিন্তা করো না। আমি বললাম চিন্তাতো লাগেই, কি করবো যে অবস্থায় তোমরা আছো, বন্দী অবস্থায়। এই বলতে বলতেই আর কথা নেই। মনে হলো যে মোবাইলটা কেড়ে নিল। শেষ কথা মায়ের সঙ্গেই শেষ হয়েছে তৌফিকের।  

ইঞ্জিনিয়ার তৌফিকুল ইসলামের স্ত্রী জোবায়দা নোমান বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে কথা হয়েছিল, তিনি ফোনে বলেছেন-দোয়া করো। আমাদেরতো সোমালিয়ায় নিয়ে যাচ্ছে, হয়তো আর যোগাযোগ হবে না। কী হবে কিছুই তো আসলে জানি না। এটাই শেষ কথা। এরপরে আর কথা হয়নি।

তিনি জানান, চট্টগ্রাম থেকে ইফতেখার স্যার ফোন করে পরিবার থেকে লোক পাঠাতে বলেছিলেন। আমার ভাশুর এবং আমার ভাই দুজন চট্টগ্রাম গেছেন।

তিনি আরও বলেন, সব কিছুর বিনিময়ে হলেও সুস্থ স্বাভাবিকভাবে তৌফিকসহ তার সহকর্মীরা আমাদের মাঝে ফিরে আসুক।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিম্মি জাহাজে মোট ২৩ জন নাবিক রয়েছেন। তারা হলেন- জাহাজের মাস্টার মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, চিফ অফিসার আতিক উল্লাহ খান, সেকেন্ড অফিসার মোজাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, থার্ড অফিসার এন মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম, ডেক ক্যাডেট সাব্বির হোসাইন, চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান, সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌফিকুল ইসলাম, থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিন, ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীর আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার ক্যাডেট আইয়ুব খান, ইলেকট্রিশিয়ান ইব্রাহীম খলিল উল্লাহ, ক্রু মো. আনোয়ারুল হক, মো. আসিফুর রহমান, মো. সাজ্জাদ হোসেন, জয় মাহমুদ, মো. নাজমুল হক, আইনুল হক, মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, মো. আলী হোসেন, মোশাররফ হোসেন শাকিল, মো. শরিফুল ইসলাম, মো. নুর উদ্দিন ও মো. সালেহ আহমদ।

মঙ্গলবার বিকেল থেকে তাদের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এর আগে নাবিকরা তাদের পরিবারের কাছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে একাধিক ক্ষুদে বার্তা পাঠান। যেখানে তারা দস্যুর কবলে পড়ার খবর দিয়ে দোয়া কামনা করেন।

প্রসঙ্গত: বাংলাদেশি মালিকানাধীন সমুদ্রগামী এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটি কয়লা নিয়ে মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে এডেন উপসাগরে জাহাজটিতে হামলা চালিয়ে নিয়ন্ত্রণ নেয় জলদস্যুরা। বাংলাদেশের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১টা থেকে ২টার মধ্যে এ জাহাজটি আক্রান্ত হয়। তাদের অনেকের হাতে অস্ত্র রয়েছে। সোমালিয়া থেকে প্রায় ৪৫০ নটিক্যাল মাইল দূরে সমুদ্রে প্রায় ১০০ দস্যু জাহাজটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। তবে নাবিকেরা নিরাপদে রয়েছেন। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৪
এমআরএম/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।