ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

২০ বছরেও এতো পানি দেখিনি

আব্দুর রহমান, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২৪
২০ বছরেও এতো পানি দেখিনি

নেত্রকোনা: চারপাশে শুধু পানি আর পানি। এই সময়ে এতো পানি ২০ বছরেও দেখিনি।

ঘরের ভেতর পানি, খাটের ওপরে টং বানাইয়া থাকতে হইতাসে, কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে উঠছে, খুবই খারাপ অবস্থায় আছি।  

রোববার (০৬ অক্টোবর) বিকেলে পানিবন্দি এলাকায় গেলে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মীর কাশেম (৬১) নামে এক ব্যক্তি।  

তিনি দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বিলকাঁকড়াকান্দা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বলেন, পানিতে রান্নাঘর, বসতঘরসহ বাড়ির সবকিছু ডুবে গেছে, জিনিসপত্র সব নষ্ট হয়ে গেছে। মানুষ না খেয়ে আছে। অনেকের গরু-ছাগল ভেসে গেছে, মারা গেছে, কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়ে উঠছে। আমাদের আমন ধান পানির নিচে যে অবস্থায় আছে সব নষ্ট হয়ে যাবে।

একই এলাকার বাসিন্দা রহিত মিয়া বলেন, পানিতে সব শেষ হয়ে গেছে। রান্না করে একবেলায় খাওয়ার মতো অবস্থাও নেই আল্লাহ জানেন আমাদের ভাগ্যে কি আছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুই চোখ যেদিকে যায় শুধুই পানি আর পানি। অনেকেই ছোট নৌকায় করে চলাফেরা করছেন, যাদের নৌকা নেই তারা কলা গাছ দিয়ে ভেলা বানিয়ে চলাচল করছেন। দুইদিন ধরে না খেয়ে আছেন বলে জানিয়েছেন তারা। মানুষগুলো কেবল আল্লাহর দিকে চেয়ে আছেন।  

স্থানীয়রা জানান, ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে প্লাবিত হয়েছে কুল্লাগড়া ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের প্রায় ১০টি গ্রাম।

এছাড়াও গাঁওকান্দিয়া, কাকৈরগড়া, চণ্ডিগড় ও বাকলজোড়া ইউনিয়নের ৩০টি বেশি গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে শত শত পুকুর ও শতাধিক মৎস্য খামারের মাছ। পানিতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষেত। স্থানীয় সড়কগুলো ডুবে যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে যানবাহন চলাচল। প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেতাই নদী ও সোমেশ্বরী নদীর পানিতে প্লাবিত হয়েছে এই নিম্নাঞ্চল। গত তিনদিন ধরে পানিবন্দি ৫০ হাজার মানুষ মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন।  

দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, পানিবন্দি এলাকার মানুষের মাঝে চালসহ শুকনো খাবার সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। নদীর পানি কমতে শুরু করলেও প্লাবিত এলাকা থেকে সরতে কিছুটা সময় লাগবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।