টঙ্গীতে তাবলিগ জামাতের যোবায়েরপন্থি ও সাদপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ জন নিহতের ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
এর আগে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের দখল নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিকে সামাল দিতে তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
সাদপন্থিদের সঙ্গে আলোচনা কতদূর এগিয়েছিল এক ফেসবুক পোস্টে তা স্পষ্ট করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
আজ বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া সেই পোস্ট দিয়েছেন হাসনাত লিখেছেন, ‘সাদ-সমর্থিত ‘সচেতন ছাত্র সমাজের’ দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি এবং সকাল ১০টার মধ্যে মাওলানা সাদ সাহেবের ভিসার জন্য বাসভবন ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণার কারণে আমরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সাদপন্থিদের সাথে আলোচনার জন্য টঙ্গী যাই।
টঙ্গীতে এই তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয় বলে জানিয়েছেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি স্পষ্ট করেন যে, ‘এই আলোচনায় আসা কথাগুলো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। কাকরাইলে মাওলানা জুবায়ের সাহেব এবং ওলামায়ে কেরামের সাথে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সে পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে হবে সাদপন্থিদের। ’
আর সেই উদ্দেশ্যে মঙ্গলবার রাত ২টায় কাকরাইলে আলোচনার জন্য যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্ররা। সেখানে মাওলানা মাহফুজুল হক ও মাওলানা মামুনুল হকসহ অন্যান্য আলেমদের সঙ্গে কথা বলেন।
হাসনাত স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘সেখানে পৌঁছানোর পর সাদপন্থিদের একজন মুফতি সাহেবের একটি পোস্ট আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়, যেখানে খণ্ডিত ভিডিও প্রচার করে বলা হয়েছে আমরা নাকি তাদের জোর করার অনুমতি দিয়েছি। এটি আমাদের সিদ্ধান্তের সম্পূর্ণ বিপরীত। ’
তিনি বলেন, ‘কাকরাইলে আলোচনাকালীন সেখানে আলেমদের উপস্থিতিতে আমরা তাদেরকে স্পষ্টভাবে জানিয়েছি যে, আমরা কোনো কর্তৃপক্ষ নই। আমরা আলোচনা করে কাকরাইল থেকে টঙ্গী গিয়ে কথা বলব এবং এরপর পারস্পরিক মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। ’
হাসনাত বলেন, ‘আলোচনার মাঝেও সাদপন্থি ওই মুফতি সাহেবকে ফোন দিয়ে বলেছি, আপনারা যদি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগে ইজতেমার ময়দানে প্রবেশ করেন, তাহলে আমাদের সাথে আপনাদের সম্পর্ক থাকবে না। আমরা কাকরাইলে আলেমদের উপস্থিতিতে সাদপন্থিদের আরও বলেছি, কোনোভাবেই আপনারা ময়দানে প্রবেশ করবেন না এবং আমাদের নিয়ে যে ভিডিও প্রচার করেছেন, তা মুছে ফেলবেন। কিন্তু এর আগেই এই নির্মম ঘটনা ঘটেছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ’
ছাত্র-আন্দোলনের এ সমন্বয়কের অনুরোধ, ‘সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে শান্ত ও ধৈর্য ধারণ করার জন্য অনুরোধ করছি। কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা না করে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। তাবলিগ একটি দ্বিনি ও ধর্মীয় ইস্যু। ফলে আমরা মনে করি, তাবলিগসহ ধর্মীয় সকল বিষয়াদি উলামায়ে কেরামের মাধ্যমেই সুরাহা ও মীমাংসিত হবে। তবে সমগ্র বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা রক্ষার দায়ভার আমাদের প্রত্যেকটি নাগরিকের। দেশের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শান্তিপূর্ণ সমাধান ও অবস্থানের জন্য আমরা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
এসএএইচ