ঢাকা: সাবেক বেসামরিক পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ফারুক খানের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একটি স্ট্যাটাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে।
স্ট্যাটাসটি রীতিমতো ভাইরাল।
স্ট্যাটাসটি নিয়ে যখন হইচই পড়ে গেছে তখন থেকে সাবেক এ মন্ত্রীর ফেসবুক আইডি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
জানা যাচ্ছে, গত বছরের ১৪ অক্টোবর রাতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে ফারুক খানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। বর্তমানে তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, কারাগারে থেকে তিনি কীভাবে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্ট্যাটাস দিলেন? তবে কি তার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে? নাকি কারাগারে মোবাইলফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন তিনি!
ফারুক খানের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লেখা রয়েছে, ‘অনেক চেষ্টা করে অনলাইনে এসেছি। জেলের চার দেয়াল আমাদের নিজ সত্তার সামনে দাঁড়া করায়। অনেক কিছু বলতে চাই, কিন্তু এখন সবই বলতে পারছি না। এতটুকুই বলবো, শেখ হাসিনাকে নেত্রী মেনেছিলাম, কিন্তু আজকে তার হঠকারিতার জন্যই আমাদের দলের এই পরিণতি। দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন এবং সর্বস্তরে শুদ্ধি অভিযান ব্যতীত কোনও ধরনের রাজনীতিতে ফেরা উচিত হবে না। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ আর চাই না। বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ফেরত চাই। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। ’
এদিকে ফারুক খানের পোস্টটি শেয়ার দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে প্রেস উইংয়ের মিনিস্টার (প্রেস) সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা।
তিনি লেখেন, এটা কি সত্যি ফারুক খানের কথা, নাকি তার ফেসবুক হ্যাক হয়েছে? হতে পারে তার নিজের কথা। এমন কথা আ. লীগের পলাতক নেতাদের অনেকেই এখন বলছেন। আবার তার আইডি হ্যাকও হয়ে থাকতে পারে। হ্যাক না হলেও আওয়ামী প্রোপাগাণ্ডাবাজরা বলবে যে হ্যাক হয়েছে। তার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, কারাগারে থেকে কী ফেসবুক ব্যবহার করা যায়? ফারুক খান তো কারাগারে। ব্যবহার করা যাওয়ার কথা না, কিন্তু করা যায়।
তিনি আরও লেখেন, প্রায় সবাই ব্যবহার করে। আ. লীগের যত নেতা কারাগারে আছে তাদের সবাই অবৈধ উপায়ে কারা কর্মকর্তাদের টাকা দিয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে,ইচ্ছে করলেই ফেসবুকও ব্যবহার করতে পারে। ফেসবুক ব্যবহার করে না, কারণ প্রশ্ন উঠবে যে কীভাবে ব্যবহার করল? ফেসবুকে প্রমাণ থেকে যায়। তারা দেশে এবং দেশের বাইরে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করছে। সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। সরকারের সেদিকে কোনো নজর আছে বলে মনে হয় না।
স্ট্যাটাসের বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) জাহাঙ্গীর কবির বাংলানিউজকে বলেন, কারাগারে বন্দির ব্যক্তিগত ফোন ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই। সুতরাং কারাগারে বসে তার (ফারুক খান) ফেসবুক চালানোর প্রশ্নই আসে না। হয়তো তার আইডি হ্যাক করে কেউ এটা করেছে।
একইরকম বক্তব্য কারা অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও সহকারী কারা মহাপরিদর্শক (এআইজি প্রিজন্স) মো. জান্নাত উল ফরহাদের।
তিনি বলেন, ‘হয়তো ফারুক খানের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তার কোনো স্বজন চালাচ্ছেন। তাদের কাছে সেটার পাসওয়ার্ড আছে। কারণ, কারাগারে থেকে ফারুক খানের মতো একজন বহুল পরিচিত বন্দির মোবাইল ফোন বা ফেসবুক চালানোর কোনো সুযোগ নেই। ’
বাংলাদেশ সময়: ২১১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০২৫
এজেডএস/এসএএইচ