কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়াম উদ্বোধন করেছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (০৬ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় কুষ্টিয়া জেলা স্টেডিয়ামে এসে আনুষ্ঠানিকভাবে শহীদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়ামের উদ্বোধন করেন তারা।
এসময় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, ‘আবরার ফাহাদ শুধু একটি নাম নয়; আবরার ফাহাদ হচ্ছেন আগ্রাসনবিরোধী সংগ্রামের চেইন। তাকে আজীবন স্মরণ করতে কুষ্টিয়া স্টেডিয়াম তার নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই স্টেডিয়ামকে আরো আধুনিকায়ন করা হবে’।
তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এদেশের তরুণেরা জীবন দেওয়ার প্রেরণা পেয়েছে আবরার ফাহাদের থেকে। আগ্রাসন থেকে মুক্তির জন্য এদেশের তরুণেরা ঝাঁপিয়ে পড়েছেন রাজপথে। অবশেষে আমরা আগ্রাসী পরাশক্তির বাংলাদেশীয় সবচেয়ে বড় খুঁটি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ থেকে পালাতে বাধ্য করেছি।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সব শহীদ এবং আহতদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে উপদেষ্টা বলেন, দীর্ঘ ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে, আগ্রাসনবিরোধী সংগ্রামে আবরার ফাহাদসহ আরো যারা আত্মত্যাগ করেছেন তাদেরকে বাংলাদেশের মানুষ ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মনে রাখবে। সেজন্য কুষ্টিয়া জেলা স্টেডিয়ামের নাম আবরার ফাহাদের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে আরো যতো সরকারি স্থাপনা আছে আমরা সেখানে আত্মত্যাগকারী বীরদের, শহীদদের স্মরণ করার জন্য তাদের নামে নামকরণ করব।
ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার আবরার ফাহাদের স্মৃতি মুছে দিতে চেয়েছিল। তারা কোনো সংবাদ করতে দিত না, কর্মসূচি পালন করতে দিতো না। কর্মসূচি পালন করতে গেলে সেখানে হামলা হতো। জেল-জুলুমের শিকার হতে হতো।
তিনি বলেন, যারা আত্মত্যাগ করে তাদের নাম মুছে ফেলা যায় না। এটি আবারও প্রমাণিত হলো। ২৪’এর গণ-অভ্যুত্থানের পর এখন বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ আবরার ফাহাদকে স্মরণ করে। আগ্রাসনবিরোধী প্রতিটি লড়াইয়ে অনুপ্রেরণা হিসেবে থাকেন শহীদ আবারার ফাহাদ।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ষড়যন্ত্র এখনো চলমান। নানা ছোটখাটো ইস্যুতে জনগণকে বিভক্ত করার, একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে পরাজিত শক্তি। নানা ধরনের উগ্রবাদীদের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে দেশের পরিস্থিতি বিনষ্ট করার জন্য। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই এ ধরনের যেকোনো প্রচেষ্টাকে অন্তর্বর্তী সরকার কঠোরভাবে দমন করবে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক তৌফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী, যুগ্ম সচিব আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
এর আগে সকালে কুমারখালীর কয়া গ্রামে আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। পরে সেখানে আবরার ফাহাদের নামে নির্মিত মসজিদের সংস্কার কাজের উদ্বোধন করেন তিনি।
২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই স্টেডিয়ামের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। ৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শেখ রাসেল নাম পরিবর্তন করে স্টেডিয়ামটি শহীদ আবরার ফাহাদের নামে নামকরণ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৪ ঘণ্টা, মার্চ ০৬, ২০২৫
এসএএইচ