ঢাকা: মিশরের কায়রোর বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকালে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় সংগীত সহকারে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এ সময় দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর দূতাবাসের সম্মেলন রুমে দিবসটির কার্যক্রম শুরু হয়। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী শহীদ, নির্যাতিতা মা-বোন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও দেশের সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। পরে দিবসটি উপলক্ষে পাঠানো রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ। সবশেষে দিবসটি উপলক্ষে পাঠানো একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
রাষ্ট্রদূত উপস্থিত সবাইকে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন। তিনি আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সব বীর শহীদ, সম্ভ্রম হারানো মা-বোনদের প্রতি তার অশেষ শ্রদ্ধা জানান। তিনি জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের এবং অসংখ্য আহতদের স্মরণ করেন। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। ১৯৪৭ থেকে দীর্ঘ ২৪ বছরে সংঘটিত বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম চূড়ান্ত রূপ লাভ করে আমাদের ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে এবং দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি আমাদের চূড়ান্ত বিজয়।
রাষ্ট্রদূত ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ সংঘটিত ঘৃণ্যতম গণহত্যার বিষয় আলোকপাত করে বলেন, এই গণহত্যা ছিল বাংলাদেশকে নেতৃত্ব ও মেধাশূন্য করার এক ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র।
রাষ্ট্রদূত বর্তমান সরকারের নেতৃত্বে বাংলাদেশের চলমান অগ্রযাত্রার বিষয়ে আলোকপাত করেন। বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৩ শতাংশ। বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য আগামী মাসে আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সামিট। পবিত্র হজ সম্পাদনের জন্য সৌদি আরব যাত্রাসহ আরব দেশগুলো ভ্রমণে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বিমান ভাড়া কমানোর কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের বিষয়ে এগিয়ে চলেছে। বৈষম্যহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে বর্তমান সরকারের অগ্রযাত্রাকে সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য সবাইকে স্বীয় ভূমিকা যথাযথভাবে পালনের আহ্বান জানান। তিনি আন্তর্জাতিক শান্তির প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকারের ব্যাপারে আলোকপাত করে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ-মিশর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, প্রধান উপদেষ্টার মিশর সফর এবং পরে পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে বাংলাদেশ-মিশর দ্বিতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশনের মাধ্যমে সম্পর্ক জোরদারকরণ এবং সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, ২৫, ২০২৫
টিআর/আরবি