ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২২ মে ২০২৫, ২৪ জিলকদ ১৪৪৬

জাতীয়

শতভাগ অনলাইনভিত্তিক ভূমিসেবা চালু হয়েছে: সিনিয়র সচিব

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮:২৬, মে ২২, ২০২৫
শতভাগ অনলাইনভিত্তিক ভূমিসেবা চালু হয়েছে: সিনিয়র সচিব বক্তব্য দিচ্ছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ।

ঢাকা: সরকার শতভাগ অনলাইনভিত্তিক ডিজিটাল ভূমিসেবা চালু করেছে বলে জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সচিবালয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সালেহ আহমেদ বলেন, আমরা শতভাগ অনলাইনভিত্তিক ডিজিটাল ভূমিসেবা চালু করেছি। এটা কিন্তু জনগণ সেভাবে জানে না, জনগণকে এ ব্যাপারে জানানোর জন্যই এই মেলার আয়োজন। জনগণকে জানানো, সচেতন করা ও উদ্বুদ্ধ করা। আরেকটি বিষয় হলো ভূমি উন্নয়ন কর আগে পহেলা বৈশাখ থেকে ৩১ চৈত্র ধরা হতো। এখন আইন করা হয়েছে অর্থনৈতিক বছর থেকে। ১ জুলাই থেকে ৩০ জুন। নতুন সরকার, মেলার মাধ্যমে আমরা চেষ্টা করলে অর্থনৈতিক বছরে রাজস্ব বাড়বে। পাশাপাশি জনগণকে ভূমি উন্নয়ন করের বিষয়ে সচেতন করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন সিনিয়র সচিব। তিনি বলেন, ‘নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করি, নিজের ভূমি সুরক্ষিত রাখি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর দেশে ২৫ থেকে ২৭ মে তিন দিনব্যাপী এ ভূমিমেলা অনুষ্ঠিত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান এজেএম সালাউদ্দিন নাগরী, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ।

সালেহ আহমেদ বলেন, ভূমি প্রত্যেক নাগরিকের জীবনে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সব আর্থ-সামাজিক কর্মকাণ্ডের মূল কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্যতম লক্ষ্য হয়রানিমুক্ত ও জনবান্ধব ভূমিসেবা ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। সে লক্ষ্য সামনে রেখে ভূমি মন্ত্রণালয় প্রযুক্তিগতভাবে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। নামজারি, ভূমি উন্নয়ন কর, পর্চা ও নকশা সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা শতভাগ অনলাইনভিত্তিক ও ক্যাশলেস করা হয়েছে। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো সময় (২৪/৭) সপ্তাহের সাতদিন দিনরাত ২৪ ঘণ্টাই উন্মুক্ত থাকে। এমনকি গত ঈদুল ফিতরের দিনও এ সেবা সার্বক্ষণিকভাবে চালু ছিল। যেকোনো নাগরিক এখন ভূমি অফিসে না এসেই এসব সেবা গ্রহণ করতে পারছেন কলসেন্টার ও নাগরিক ভূমিসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে।

তিনি আরও বলেন, সারা দেশব্যাপী ভূমি উন্নয়ন কর শতভাগ অনলাইনে আদায় করা হচ্ছে। ভূমিসেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) তথা পেমেন্ট গেটওয়েসহ অর্থ বিভাগের এ চালান সিস্টেমের ফলে নাগরিকের অনলাইন সিস্টেমে পরিশোধিত ফিসমূহ তাৎক্ষণিকভাবে সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে। পুরোপুরি অনলাইন হওয়ার ফলে ভূমিসেবা থেকে রাজস্ব আয় বহুগুণে বেড়েছে। ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের সঙ্গে সঙ্গে নাগরিকরা তাৎক্ষণিকভাবে অনলাইনে কিউআর কোড সমৃদ্ধ একটি দাখিলপ্রাপ্ত হচ্ছেন, যা সর্বত্র গ্রহণযোগ্য। সারাদেশের অনলাইনে আদায়কৃত ফিসসমূহ সরাসরি ড্যাশবোর্ডে প্রদর্শিত হচ্ছে। অচিরেই বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের জন্য ড্যাশবোর্ড চালু করা হবে। ভূমিসেবা ডিজিটাল রূপান্তরের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। নাগরিকের দোরগোড়ায় সরকারি সেবা পৌঁছে দিতে ইতোমধ্যেই চালু হয়েছে ওয়েবভিত্তিক ভূমিসেবা সিস্টেম ২.১। হয়রানি, ভোগান্তি, দুর্নীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ডিজিটাইজেশন কার্যক্রম নাগরিকদের জন্য স্বস্তিকর একটি প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।

সিনিয়র সচিব বলেন, বর্তমানে অনলাইনে প্রতি মাসে প্রায় ৫ লাখ নামজারি মামলা নিষ্পত্তি করা হচ্ছে। তিনটি পার্বত্য জেলা ব্যতীত সারাদেশের মোট ৫১৬টি উপজেলা ও সার্কেল ভূমি অফিস এবং ৩ হাজার ৪৬৭টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ই-নামজারি চালু হয়েছে। নামজারি ৭ থেকে ২৮ কর্মদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করা হচ্ছে। গত বছরের জুলাই ও চলতি বছরের ১৫ মে পর্যন্ত নামজারি সিস্টেম থেকে অনলাইনে প্রায় ২৯০ কোটি ২২ লাখ ৩০ হাজার টাকা, ভূমি উন্নয়ন কর থেকে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা এবং অনলাইন খতিয়ান থেকে প্রতিমাসে গড়ে ৩ লাখ ২১ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে। বর্তমানে ৬ কোটি ৫০ লাখের অধিক খতিয়ান অনলাইনে রয়েছে।

এসকে/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।