ঢাকা, বুধবার, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২৮ মে ২০২৫, ০০ জিলহজ ১৪৪৬

জাতীয়

মাতারবাড়ির অবকাঠামো উন্নয়ন দ্রুততর করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:৪৭, মে ২৭, ২০২৫
মাতারবাড়ির অবকাঠামো উন্নয়ন দ্রুততর করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

ঢাকা: উপকূলীয় অঞ্চলকে দেশের শীর্ষস্থানীয় উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলে রূপান্তরের লক্ষ্যে মাতারবাড়ি এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন আরও দ্রুত করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (২৭ মে) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মহেশখালী-মাতারবাড়ি সমন্বিত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগের (এমআইডিআই) অগ্রগতি পর্যালোচনা শেষে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “মাতারবাড়িকে দেশের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর, পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহ এবং জ্বালানি উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের বিপুল বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে। ” এ জন্য তিনি একটি মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন, যা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সহজতর করবে।

তিনি সড়ক পরিবহন ও নৌ-পরিবহন সচিবদের মহেশখালী-মাতারবাড়িকে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে যুক্ত করতে সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা এবং সমুদ্রগামী কন্টেইনার জাহাজ ধারণক্ষম টার্মিনাল নির্মাণের নির্দেশ দেন। একইসাথে, এ অঞ্চলের জন্য একটি পরিকল্পিত শহর গড়ে তোলার কথা বলেন, যা মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল ও সংশ্লিষ্ট শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের জন্য উপযোগী হবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, আগামী ২৮ মে শুরু হতে যাওয়া জাপান সফরে এমআইডিআই অঞ্চলের উন্নয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ এজেন্ডা হিসেবে উপস্থাপিত হবে। সফরের অংশ হিসেবে ৩০ মে টোকিওতে অনুষ্ঠিতব্য ৩০তম নিক্কেই ফিউচার অব এশিয়া সম্মেলনে তিনি অংশ নেবেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকে মাতারবাড়ীর গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলির জন্য অর্থায়ন নিশ্চিত করার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাবে।

বৈঠকে জানানো হয়, মহেশখালী-মাতারবাড়ি অর্থনৈতিক অঞ্চলে জাপান তাদের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানের প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চলটি ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং সেখানে উল্লেখযোগ্য বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে।

এছাড়া, সৌদি আরবের পেট্রোকেমিক্যাল জায়ান্ট আরামকো, আবুধাবি পোর্টস, সৌদি রেড সি গেটওয়ে, জাপানের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী জেরা এবং মালয়েশিয়ার পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানি পেট্রোনাসসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক কোম্পানি এ অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে।

বাংলাদেশ সম্প্রতি মাতারবাড়িতে দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের জন্য জাপানি প্রতিষ্ঠান পেন্টা-ওশান কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড এবং টোয়া কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (জাইকা) সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন এই প্রকল্পকে এমআইডিআই উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, যা এই অঞ্চলের সংযোগ এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনা অনেকগুণ বৃদ্ধি করবে।

এমআইডিআই উদ্যোগটি বাংলাদেশ ও জাপানের যৌথ প্রচেষ্টা, যা সরবরাহ ব্যবস্থা, জ্বালানি এবং শিল্প উন্নয়নের মাধ্যমে মহেশখালী-মাতারবাড়িকে একটি কৌশলগত অর্থনৈতিক করিডোরে রূপান্তর করবে।

প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোর্শেদ, সড়ক পরিবহন, নৌ-পরিবহন, জ্বালানি, বিদ্যুৎ এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিববৃন্দ। বৈঠকে এমআইডিআই সেলের মহাপরিচালক সারওয়ার আলম চলমান প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন।

এমইউএম/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।