ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২, ২২ জুলাই ২০২৫, ২৬ মহররম ১৪৪৭

জাতীয়

দিয়াবাড়িতে শোকের মাতম, অ্যাম্বুলেন্স দেখলেই ছুটছেন স্বজনরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯:৫১, জুলাই ২১, ২০২৫
দিয়াবাড়িতে শোকের মাতম, অ্যাম্বুলেন্স দেখলেই ছুটছেন স্বজনরা রক্তের আহ্বান করছেন স্বজনরা ছবি: ডিএইচ বাদল

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দিয়াবাড়িতে সৃষ্টি হয়েছে হৃদয়বিদারক পরিবেশ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হাজারো মানুষ উৎসুক চোখে তাকিয়ে রয়েছেন; কেউবা আহত-নিহত স্বজনের খোঁজে শোকে পাথর; কেউ শোকে মাতম করছেন।

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত দেখা গেছে, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুর্ঘটনাস্থল থেকে একে একে অ্যাম্বুলেন্স বের হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে শত শত মানুষ ছুটে যাচ্ছে সেটির পেছনে, যেন সেই গাড়িটিতেই আছে তার দগ্ধ শিশুটি বা স্বজন।

উদ্ধারকারী দলে রয়েছে বিমান বাহিনী, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্বেচ্ছাসেবীরা। তারা মাইলস্টোন থেকে অ্যাম্বুলেন্স বের করতে হিমশিম খাচ্ছেন। ভিড়ের চাপে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।

এদিকে রক্তের প্রয়োজনের বিষয়টিও বারবার ঘোষণা করা হচ্ছে। কখনও মাইকিং, কখনও কাগজে লিখে জানানো হচ্ছে— দগ্ধ শিশুদের রক্ত লাগবে। কেউ কেউ আবার চিৎকার করে জানাচ্ছেন, রক্ত লাগবে, অমুক গ্রুপের রক্ত দরকার। অনেকে নিজেরা কাগজে লিখে জানাচ্ছেন তারা রক্ত দিতে চান।

পুরো এলাকাজুড়ে মানুষের ঢল। সড়কে লোক, বাড়ির ছাদে লোক, গাড়ির ছাদে লোক— ঘটনাস্থলের চারপাশ লোকে লোকারণ্য। অনেকেই শুধু দেখতে এসেছেন দুর্ঘটনাস্থল।

উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর কাজ করছে প্রশাসন ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা।

যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস। নিহতের বেশিরভাগই শিক্ষার্থী, এমন তথ্যও পাওয়া গেছে।  

সোমবার দুপুর ১টা ৬ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়ন করে এবং মাত্র ১২ মিনিট পর, ১টা ১৮ মিনিটে এটি দুর্ঘটনার শিকার হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আকাশে ওড়ার কিছুক্ষণ পরই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করে।

বিমানটি চালাচ্ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম। একটি সমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, আজ ছিল ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌকিরের সলো অফ ফ্লাইট ট্রেনিং। যে কারণে তিনি কোনো ট্রেইনার ছাড়া একাই ফ্লাইট পরিচালনা করছিলেন।   

আইএসপিআরের হিসাব মতে, নিহতদের মধ্যে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১১ জন, জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দুজন, কুর্মিটোলা জেনারেল হসপিটালে দুজন, লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে দুজন, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে একজনের লাশ রয়েছে।

আর আহতদের মধ্যে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৭০ জন, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে ৬০ জন, সিএমএইচে ১৪ জন, লুবনা জেনারেল হাসপাতালে ১১ জন, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল আটজন ও উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে একজন চিকিৎসা নিচ্ছেন।

জেডএ/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।