ঢাকা: বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত, আহত ও নিখোঁজদের তথ্য প্রকাশ করেছে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, গত ২১ জুলাই আনুমানিক দুপুর ১টা ১২ মিনিট থেকে ১টা ১৪ মিনিটের মধ্যে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডিয়াবাড়ি স্থায়ী ক্যাম্পাসে একটি দোতলা ভবনে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণরত অবস্থায় বিধ্বস্ত হয়। দুপুর ১টায় স্কুল ছুটি হয়ে যাওয়ায় তখন অভিভাবকদের জন্য শুধু স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী অপেক্ষারত অবস্থায় ছিল। এ সময়ে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার আকস্মিকতায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ হতবিহ্বল ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে মুহূর্তের মধ্যে মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থীরা, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ও এলাকাবাসী উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী, বাংলাদেশ নৌ বাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশ ও র্যাবের প্রশিক্ষিত জনবল সম্মিলিতভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ উদ্ধার কাজে অংশগ্রহণ করে।
আমরা অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে জানাচ্ছি যে, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় আমাদের স্কুল শাখার ১৮ জন শিক্ষার্থী, দুজন শিক্ষক, দুজন অভিভাবক মৃত্যুবরণ করেন।
এ দুর্ঘটনায় গুরুতরভাবে আহত হন ৫১ জন। এদের মধ্যে ৪০ শিক্ষার্থী, সাতজন শিক্ষক, একজন অভিভাবক, একজন আয়া ও একজন পিয়ন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে পাঁচজন, যাদের মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থী ও দুইজন অভিভাবক। এ ঘটনায় ২২ জুলাই মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ শুধু এ প্রতিষ্ঠানে নিহত, আহত ও নিখোঁজের তথ্য তুলে ধরছে। কর্তৃপক্ষের তথ্য হালনাগাদকরণের কাজ চলমান। এ দুঃখজনক ঘটনায় হতাহতের সর্বমোট সংখ্যা তুলে ধরছে আইএসপিআর। হৃদয়বিদারক এ দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের শোকাহত সদস্যদের প্রতি আমরা গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। আহতদের চিকিৎসাসহ সব প্রয়োজনে মাইলস্টোন কর্তৃপক্ষ সবর্দা পাশে রয়েছে।
আমাদের শিক্ষার্থী ও সন্তান হারানোর এই চরম শোকসন্তপ্ত অবস্থায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টারা, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিএনসিসি, রোভার স্কাউট, রেডক্রিসেন্ট, অভিভাবকরা, এলাকাবাসীসহ পুরো জাতি আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়। প্রত্যেকেই তাদের অবস্থান থেকে সহানুভূতি, সহমর্মিতা ও সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনী গুরুতরভাবে আহতদের উন্নত ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এ ব্যাপারে চিকিৎসা ও সেবাকার্যক্রম সমন্বয়ের জন্য একটি জরুরি সেল গঠন করেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।
দুর্ঘটনার প্রথম থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধার, যোগাযোগ, সেবা, চিকিৎসাসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে যারা মানবিকতার হাত বাড়িয়েছেন সেসব ব্যক্তি, সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি সব গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের প্রতি, যারা মর্মান্তিক এ ঘটনাকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবার দৃষ্টিগোচর করেছেন।
আরকেআর/আরআইএস