আমাদের ফরেন পলিসি (পররাষ্ট্রনীতি) এক সময় একটা দেশের কাছে বন্ধক দেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, আমাদের ফরেন পলিসি ইনডিপেনডেন্ট।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিকুল আলম এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য অধিদপ্তরের প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. নিজামুল কবীর। সভাপতিত্ব করেন বিএসআরএফ’র সভাপতি মাসউদুল হক। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদল।
শফিকুল আলম বলেন, প্রশাসনকে নিরপেক্ষ করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য কাজ ছিল। গত ১২ মাসে সরকার এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। বর্তমানে অনেক জায়গায় নিরপেক্ষতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের শাসন থেকে শিক্ষা নেওয়ার সুযোগ এসেছে আমাদের সবার জন্য। সাংবাদিকদেরও এটি বড় শিক্ষা—একটি রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করা যায়, কিন্তু তার নামে যদি আপনি হত্যাযজ্ঞ বা নির্বাচনহীনতাকে বৈধতা দেন, তখন আর নিরপেক্ষতা থাকে না।
প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই সরকার দেশকে স্থিতিশীল পথে নিয়ে এসেছে। মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কাছাকাছি এসেছে, যা কমিয়ে আনা অত্যন্ত কঠিন কাজ।
শফিকুল আলম বলেন, টাকা-ডলারের বিনিময় হার এখন স্থিতিশীল। রিজার্ভ বাড়ছে। প্রবাসী ভাইদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া পদক্ষেপগুলোও এতে সহায়ক হয়েছে। এনবিআরে হস্তক্ষেপ করে কিছু সংস্কার আনা হয়েছে, যার সুফল অচিরেই পাওয়া যাবে। আমরা আশা করি আগামী সরকারের মেয়াদে বিদেশি বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।
জনশক্তি রপ্তানি ও ভিসা জটিলতা প্রসঙ্গে শফিকুল আলম বলেন, বিদেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে প্রতিমাসে তথ্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। আমরা তথ্য গোপন করি না।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) জনশক্তি রপ্তানি ও ভিসা ইস্যু বন্ধ ছিল, এখন তা খুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মালয়েশিয়া ও জাপানে আমরা কাজ করছি। জাপানে এক লাখ কর্মী পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কোরিয়াতেও অগ্রগতি হচ্ছে।
ভিসা জটিলতা নিয়ে তিনি বলেন, এই সংকট আমাদের আমলে শুরু হয়নি। ইউএই ভিসা ২০১২–১৩ সাল থেকেই বন্ধ ছিল। তবে আমরা সমাধানে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতেও এই প্রচেষ্টা চলবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ২৫টি বোয়িং বিমান কেনার বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, এই বিমানগুলো এক দিনে কেনা হচ্ছে না। দীর্ঘ সময় ধরে ধাপে ধাপে কেনা হবে। ততদিনে আমাদের এয়ার ট্রাফিকও বাড়বে। প্রতিবছরই উন্নতি হচ্ছে, কোনো কোনো বছর তা দ্বিগুণ হারে বাড়ছে। আমাদের পাইলটদের প্রশিক্ষণ হয় বোয়িংয়ে, তাই বোয়িং কেনা আমাদের জন্য যৌক্তিক।
জিসিজি/আরবি