বগুড়া থেকে: জাতীয় পতাকার মর্যাদা যেনো কোনোভাবেই ক্ষুণ্ণ না হয়, সবসময় পতাকা সমুন্নত রাখতে সবাইকে সর্বদা সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সকাল সোয়া ১১টায় বগুড়া সেনানিবাসে আর্মার্ড কোরের ১২ ল্যান্সারকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড (জাতীয় পতাকা) দেওয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগের ইতিহাস তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত আমাদের স্বাধীনতা। আর স্বাধীনতা অর্জনের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছি এ পতাকা। পতাকার মর্যাদা যেনো কখনোই ক্ষুণ্ণ না হয়। পতাকা সবসময় সমুন্নত রাখতে সবাইকে সদা সচেষ্ট থাকতে হবে।
ন্যাশনাল স্টান্ডার্ডপ্রাপ্ত আর্মার্ড কোরের ১২ ল্যান্সার সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ঐতিহ্যগতভাবে একটি ইউনিটের কর্মদক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও অর্জনগুলো বিবেচনা করে রেজিমেন্টাল এবং পরবর্তীতে জাতীয় পতাকা দেওয়া হয়ে থাকে।
‘তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি’ উদ্ধৃতিটি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, জাতীয় পতাকাপ্রাপ্তি একটি ইউনিটের জন্য বিরল সম্মানের। একটি ইউনিটকে অধ্যবসায়, কর্মদক্ষতা ও ত্যাগ তিতীক্ষার মাধ্যমে এ বিরল সম্মান অর্জন করতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা প্রবর্তিত ১৯৭৪ সালের প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে আমরা জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি ও ফোর্সেস গোল-২০৩০ প্রণয়ন করেছি।
‘এছাড়া সেনাবাহিনীর উন্নয়ন, সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যকে সামনে রেখে জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি ও ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আলোকে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে সরকার পরিচালনার সময় আমরা ১টি পদাতিক ব্রিগেড, ১টি সংমিশ্রিত ব্রিগেড, স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন, ১টি সাঁজোয়া ইউনিট, ৩টি পদাতিক ইউনিট, ২টি আর্টিলারি রেজিমেন্ট, ১টি রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়ন, ২টি ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন এবং ১টি সাপোর্ট ও ট্রান্সপোর্ট ব্যাটালিয়ন প্রতিষ্ঠা ও পুনর্গঠন করেছি। ’
পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে আরও কার্যকর ও যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে উন্নত প্রযুক্তির অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহের যে কার্যক্রম নেওয়া হয়েছিলো তা এখনও চলমান রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
এদিন প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে পৌঁছালে সেনাবাহিনী প্রধান আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক তাকে অর্ভ্যথনা জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, মন্ত্রীপরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, নৌ বাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধানসহ সামরিক, বেসামরিক ও কূটনীতিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এর আগে, এদিন সকাল সোয়া ১০টায় একদিনের সরকারি সফরকে কেন্দ্র করে বগুড়া পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি দুই মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হবার পর এটিই তার প্রথম সফর।
এছাড়াও বেলা আড়াইটায় তিনি স্থানীয় আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। জনসভা শেষে বিকেল সোয়া ৪টায় তিনি ঢাকার উদ্দেশে বগুড়া ত্যাগ করবেন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে বগুড়া শহরকে। বিশেষ করে মাঝিড়া সেনানিবাস থেকে আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ পর্যন্ত সড়ক পথে প্রধানমন্ত্রীর যাতায়াতের রাস্তাকে সর্বোচ্চ নিরাপদ রাখতে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৫/আপডেট: ১৪০১ ঘণ্টা
এমইউএম/এসএস