ঢাকা: দেশের প্রতিবন্ধীদের সাবলম্বী হিসেবে গড়ে তুলতে ৭২টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। দেশের প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৬০-৭০ লাখ।
মঙ্গলবার (০১ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের আয়োজনে প্রতিবন্ধীদের সার্বিক উন্নয়নে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিক-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর দেশের প্রতিটি জেলা উপজেলায় যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ট্রেনিং দিচ্ছে। এর মধ্যে ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে প্রতিবন্ধীদের জন্য। এছাড়াও ৬০টি ভ্যান গাড়ির মাধ্যমে বেকারদের এক মাস করে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে এবং এর সুফল পাচ্ছে প্রতিবন্ধীরাও।
তারিকুল ইসলাম বলেন, আগামী ৩ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। প্রতিবন্ধীদের নাম রেজিস্ট্রেশন করার জন্য জরিপ চলছে। এরপর তাদের পরিচয়পত্র দেয়া হবে। আগে চার লাখ প্রতিবন্ধীকে ভাতা দেয়া হতো এখন সেই সংখ্যা বেড়ে ছয় লাখে দাঁড়িয়েছে। তাদের ভাতাও বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন,সাভারে ৭৮ একর জমি নেয়া হয়েছে। সেখানে প্রতিবন্ধীদের জন্য ক্রীড়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। প্রতিবন্ধীরা খেলাধুলাতেও বেশি সুনাম অর্জন করেছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালক (পরিকল্পনা) আবুল হাসান খান বলেন, প্রতিটি প্রতিবন্ধীর জন্য আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। কর্মসংস্থান শেষে তারা যেন নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারে তার জন্য সহজ শর্তে ঋণ দেয়া হচ্ছে। তারা যেন স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেন তার জন্য আমরা তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করছি।
মহিলা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নাসরিন জাহান বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ প্রতিবন্ধী। আর এই ১৫ শতাংশের অর্ধেক হচ্ছে নারী। বিভিন্ন ট্রেডে তাদের কাজ করার সুযোগ আছে। আমরা তাদের পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেই। তিনি বলেন,দেশের প্রায় ২০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে যারা প্রতিবন্ধীদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত প্রতিবন্ধীরা কর্মক্ষেত্রে তাদের সুবিধা অসুবিধার কথা তুলে ধরেন। তারা বলেন, তাদের মাসে মাত্র ৫’শ টাকা করে ভাতা দেয়া হয়। যা খুবই অপ্রতুল। এই টাকা দিয়ে বর্তমান বাজার মূল্যে একজনেরও খরচ হয় না।
বিজিএমইএ এর অতিরিক্ত সচিব উইং কমান্ডার এম জেড হায়দার (অব.) বলেন, প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিজিএমইএ অংশ নিয়েছে। বিজিএমইএ’র ৫০টি প্রশিক্ষণ সেন্টারের মাধ্যমে যুব নারীদের বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। সেখানে প্রতিবন্ধীরাও এই প্রশিক্ষণে অংশ নিয়ে থাকেন এবং তাদের কর্মক্ষেত্রের জন্য আমরা অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি।
বিজিএমইএ এর প্রধান কার্যালয়ে দু্’জন প্রতিবন্ধী কাজ করছেন এবং তারা খুব দক্ষতার সাথে কাজ করছে বলে তিনি জানান। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন এডিডি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে’র কান্ট্রি ডিরেক্টর মো.শফিকুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা,ডিসেম্বর ০১,২০১৫
এমআইকে/এসএস/আরআই