লক্ষ্মীপুর: নদীর ওপর বেইলি ব্রিজ। তবে, সেই ব্রিজ পারাপারের জন্য নেই কোনো সংযোগ সড়ক।
এমনই বিড়ম্বনার চিত্র দেখা গেছে লক্ষ্মীপুরের রামগতির চর আফজল গ্রামে। এ গ্রাম দিয়ে বয়ে গেছে মেঘনার শাখা নদী ভূলুয়া। ওই নদীর ওপর নির্মিত বেইলি ব্রিজ এটি। বর্তমানে এমনই বেহাল অবস্থা, যেনো ব্রিজ নয়, মরণফাঁদ।
দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ব্রিজটি এমন অবস্থায় থাকলেও সংস্কার হয়নি আজও। নেই কোনো উদ্যোগ। এমন পরিস্থিতিতে বাঁশ-কাঠের সাঁকো তৈরি করা ছাড়া কি-বা করার ছিল দু’পাড়ের বাসিন্দাদের। মাঝে-মধ্যে এ ব্রিজ দিয়ে মোটরসাইকেল ও দু’একটি অটোরিকশাও পারাপার করতে দেখা যায়। এ পারাপার অনেক ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও তারা এভাবেই পারাপার হচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০০২-২০০৩ অর্থবছরে প্রায় ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সীমানা ঘেঁষে রামগতিতে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের এ বেইলি ব্রিজটি নির্মিত হয়। এটি নির্মিত হওয়ায় লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর- এ দু’অঞ্চলের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার মিলন ঘটে। কিন্তু নির্মাণের মাত্র তিন বছরের মাথায় ব্রিজের দু’পাড়ের রাস্তার মাটি নদীর স্রোতে ধসে যায়। এতে রাস্তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ব্রিজটি।
এদিকে, ব্রিজটির গার্ডারও ধসে পড়েছে। স্টিলের পাটাতনগুলোও মরিচা ধরে ভেঙে গেছে। সংস্কারের অভাব আর অযত্নে-অবহেলায় ব্রিজের এখন এ অবস্থা।
ব্রিজটি সংস্কার ও রাস্তা পুনর্নিমাণ না করায় রামগতির লোকজন নোয়াখালী, ফেনী, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় সহজে যাতায়াত করতে পারছেন না। অনেক ভোগান্তির পর গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় তাদের। ভোলা জেলার মানুষরাও চৌধুরীরহাট খেয়াঘাট হয়ে ঝুঁকি নিয়ে পার হন ব্রিজটি। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা।
স্থানীয়রা জানান, ব্রিজটির বেহালদশার কারণে এ পথে যাতায়াতকারী স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, নারী-পুরুষ, বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু ও রোগীদের ভোগান্তির অন্ত নেই। এছাড়া ভারী যানবাহন চলাচল করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এলাকাবাসী দ্রুত এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি চান।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) রামগতি উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী জি এম কামাল বলেন, ব্রিজটির অ্যাপ্রোচের মাটি সরে গিয়ে মূল সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্রিজটি সম্পর্কে জানানো হলেও এখন পর্যন্ত সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০১২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৫
আরএ/এএসআর