ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বিশ্বমানের বিমান বাহিনী গড়ে তোলা হবে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০১৫
বিশ্বমানের বিমান বাহিনী গড়ে তোলা হবে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আধুনিক ও বিশ্বমানের বিমান বাহিনী গড়ে তুলতে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, উন্নত প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সরঞ্জামাদি ও ব্যবস্থাপনা বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর দক্ষতা ও অপারেশনাল কার্যক্ষমতা আরো বাড়িয়ে দেবে।

সম্পদের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও যতোটুকু সহায়তা দেওয়া সম্ভব তা দিতে বর্তমান সরকার কোনোদিন কাপর্ণ্য করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না।

রোববার (০৬ ডিসেম্বর) ঢাকা সেনানিবাসে বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটিতে বিমান বাহিনী বহরে অত্যাধুনিক ডিজিটাল ককপিট সম্বলিত ইয়াক-১৩০ কমব্যাট প্রশিক্ষণ বিমান ও মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ হেলিকপ্টার অগাসটা এডব্লিউ-১৩৯ অন্তর্ভুক্তি অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিমান বাহিনীর মূল দায়িত্ব আকাশসীমা সুরক্ষা করা। সেই সঙ্গে আমরা যে বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছি, তা সুরক্ষিত রাখা এবং সমুদ্র সম্পদের ওপর নজরদারি করার ক্ষেত্রেও বিমান বাহিনীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
Sheikh_Hasina_01
তিনি বলেন, একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশের জন্য সশস্ত্র বাহিনী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যেকোনো একটি যুদ্ধক্ষেত্রে সেনা, নৌ ও বিমান তিনটি বাহিনীরই দায়িত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশের যে ভৌগলিক অবস্থান রয়েছে, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সংযুক্ত ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান ও অ্যাডভ্যান্স জেট ট্রেইনার বিমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও বাহিনীকে সামনে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রশিক্ষণার্থীদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস এবং বিশ্বমানের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যুদ্ধকালে বাংলাদেশের আকাশকে শত্রুমুক্ত রাখতে ও প্রয়োজনে শত্রু বিমানে আক্রমণ এবং সেনা ও নৌ-বাহিনীকে সহযোগিতা করতে বিমান বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে বলেও আশা করেন তিনি।

এডব্লিউ-১৩৯ হেলিকপ্টার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামুদ্রিক এলাকায় উদ্ধার কাজের সামর্থ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে এডব্লিউ-১৩৯ হেলিকপ্টার সংযোজন করেছি। এ হেলিকপ্টার যেকোনো প্রাকৃতিক দুযোর্গ ও আপদকালীন সময়ে উপকূল ও সামুদ্রিক এলাকায় অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান পরিচালনায় সক্ষম। এর মাধ্যমে পরিবেশ বিষয়ক টহল প্রদান, জলদস্যুতা রোধে মিশন পরিচালনা, সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর প্রয়োজনীয় কৌশলগত সহায়তা প্রদান সম্ভব হবে।
Sheikh_Hasina_02
অচিরেই বিমান বাহিনী বহরে অত্যাধুনিক ৫টি নতুন হেলিকপ্টার ও ১২টি প্রশিক্ষণ বিমান যুক্ত করার পাশাপাশি বিমান বাহিনীর বৈমানিকদের সময় উপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নতর যুদ্ধ বিমান পরিচালনায় উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য অ্যাডভ্যান্স জেট ট্রেইনার বিমান সংগ্রহ করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী দেশে-বিদেশে বিমান বাহিনীর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন।

অত্যাধুনিক মিগ-২৯ যুদ্ধ বিমান, সি-১৩০ পরিবহন বিমান, উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন আকাশ প্রতিরক্ষা রাডার, এফ-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান, এম-১৭১-এসএইচ হেলিকপ্টার, অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র স্যাম এফএম ৯০, কে-৮ ডব্লিউ জেট প্রশিক্ষণ বিমান, এল-৪১০ পরিবহন প্রশিক্ষণ বিমান, কক্সবাজারে নতুন এয়ার ডিফেন্স রাডার, কক্সবাজারে একটি পূর্ণাঙ্গ বিমান ঘাঁটিসহ বিমান বাহিনীর উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

দারিদ্র্য হার হ্রাস, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। সব দিক দিয়েই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেব গড়ে উঠবে। শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে তার নিজের স্থান করে নেবে।
Sheikh_Hasina_03
আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা বোধ নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্পদের সীমাবদ্ধতা আছে। তা কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে না যদি আমাদের মধ্যে এ আত্মবিশ্বাস থাকে। আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা বোধ নিয়েই বাংলাদেশের জনগণ এগিয়ে যাবে। বিশ্বে নিজের মর্যাদার স্থান করে নেবে।

তিনি আরো বলেন, আমরা জাতির পিতার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। আমাদের সকল মানুষকে সব সময় এটা মনে রাখতে হবে যে, আমরা যুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বিজয়ী জাতি। আমরা কারো কাছে হার মানি না, পরাজিত হই না। বিশ্বসভায় আমরা মাথা উঁচু করে চলবো। সেভাবে আমাদেরও গড়ে তুলতে হবে।

পরে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীতে নতুন সংযোজিত প্রশিক্ষণ বিমানের ডিসপ্লে দেখেন।

এর আগে অর্ন্তভুক্তি আদেশের পর প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, বিমান ও নৌ-বাহিনী প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৫
এমইউএম/আরএম/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।