ঢাকা: ফেলানী হত্যা মামলাসহ সীমান্তে হত্যা, নারী ও শিশু পাচার, মাদক চোরাচালান রোধে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ( বিজিবি) ও ভারতের সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফের মধ্যে ২২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে সীমান্ত সম্মেলন।
বিজিবর সদর দফতরে (পিলখানায়) ২২ থেকে ২৭ ডিসেম্বর দু’দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর ডিজি পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (০৬ ডিসেম্বর) দুপুরে বিজিবি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদের ৩ বছরের মেয়াদকালের এই বাহিনীর সফলতার বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিজিবি’র মহাপরিচালক আজিজ আহমেদ বলেন, দেশের নাগরিকরা সচেতন হলে সীমান্ত হত্যাকাণ্ড শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনা সম্ভব। আমাদের দেশের জনগণ যদি রাতের আধারে অবৈধ ভাবে সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ না করে তাহলেই সম্ভব। সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নাগরিকদের সচেতনতা প্রয়োজন। নাগরিকরা সচেতন হলেই এটা আর থাকবে না।
সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, গত বছর সীমান্তে ৪০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত ৩৩ জনকে হত্যা করা হয়েছে।
তিন বছর আগে বিজিবি’র ডিজি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার সময় আজিজ আহমেদ বলেছিলেন, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড শূণ্যের কোটায় নামিয়ে আনবো। তার সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ার পেছনে নাগরিকদের অসচেতনতাকেই দোষারোপ করলেন ডিজি।
ডিজি বলেন, নাগরিকরা সচেতন না বলেই সীমান্ত হত্যাকাণ্ড শূণ্যের কোটায় আনা যায়নি। ২০১২ সালের ৫ ডিসেম্বর আমি বিজিবি’র জিডি হিসেবে দায়িত্ব নেই। এরপর সফলতা ব্যর্থতার মধ্যদিয়ে আমার পথচলা। সীমান্তের খবর মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি।
তিনি বলেন, আমার আমলে আমি ২৭৩ টি স্থপনা নির্মাণ করেছি। আরও ১৬৭ টি প্রক্রিয়াধীন। এক্ষেত্রে প্রত্যেকটি বিজিবি ব্যাটালিয়ন সাহসিকতার সঙ্গে সহযোগিতা করে আসছে। বিজিবি’র ট্রেনিংয়ে আনা হযেছে আমূল পরিবর্তন। স্বশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণ ও অস্ত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বিজিবির সদস্যদের যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
ডিজি বলেন, ওয়ারলেস কমুউনিকেশন ছাড়াও এখন প্রতিটি ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য চালু করা হয়েছে ভিডিও কনফারেন্স। এর ফলে বিজিবি-ব্যাটেলিয়ানের মধ্যে কানেকটিভিটি আরও জোরদার হয়েছে।
বিজিবির অপারেশন কার্যক্রমে সংযুক্ত করা হয়েছে ২০টি ডগ (কুকুর) স্কোয়াড। মাত্র ২৫ হাজার রুপিতে কুকুর গুলো ভারত থেকে কিনে ও প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এ ডগ স্কোয়াড মাদক স্বর্ণ ও ইয়াবা ধরতে কার্যকরী।
বর্ডার আউটপোস্ট বা বিওপি বিজিবি’র চালিকা শক্তি উল্লেখ করে বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বিজিবি’র রয়েছে সাড়ে ৭শ’ বিওপি। আমাদের প্রধান ফোকাস হচ্ছে বিওপি’র উন্নয়ন। আগামী বছর আরও ৬০টি বিওপি স্থাপণ করা হবে।
বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, বিজিবি সদস্যদের তাৎক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য ৩টি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। টেল মেডিসিন কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। এজন্য ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে সফওয়্যার। এছাড়া বিজিবি সদর দফতরে বিজিবি সদস্যদের সন্তানদের লেখা পড়ার সুবিধার্থে আলাদা ছাত্র ও ছাত্রী হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে।
বিজিবির ডিজি বলেন, বিজিবির সদস্যদের কল্যাণে বিজিব ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট গঠন করা হয়েছে। বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এখানে চাকুরি করতে পারবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৫
এনএ/বিএস