ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীনের শাহাদৎবার্ষিকী বৃহস্পতিবার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০১৫
বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীনের শাহাদৎবার্ষিকী বৃহস্পতিবার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন

খুলনা: বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমীন ও বীরবিক্রম মহিবুল্লাহর ৪৪তম শাহাদৎবার্ষিকী বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর)।

দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশ নৌবাহিনী, খুলনা জেলার রূপসা উপজেলা প্রশাসন ও প্রেসক্লাব নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।



১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর তৎকালীন চালনা বন্দর (বর্তমানের মংলা বন্দর), হিরণ পয়েন্ট এবং খুলনার তিতুমীর নৌঘাঁটি দখল করতে যুদ্ধজাহাজ পলাশ, পদ্মা ও ভারতীয় বাহিনীর আইএনএস পানভেল কলকাতার হলদিয়া বন্দর থেকে খুলনা অভিমুখে রওনা দেয়।

রণতরী বহরের পলাশ যুদ্ধজাহাজে ছিলেন রুহুল আমীন ও মহিবুল্লাহসহ আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধা ও নৌসেনা। রুহুল আমীন ছিলেন ওই জাহাজের ইঞ্জিন রুম আর্টিফিশিয়ার-১ এর দায়িত্বে ।

দেশ স্বাধীনের মাত্র ৬ দিন আগে খুলনার শিপইয়ার্ডের অদূরে এ দুই বীর সন্তানসহ মুক্তিকামী দামাল বীর সেনা মিত্র বাহিনীর বোমা বিস্ফোরণে শহীদ হন।

মংলা বন্দরসহ বিভিন্ন এলাকা শত্রুমুক্ত করে ১০ ডিসেম্বর ভোরে খুলনা অভিমুখে রওনা হন রণতরী তিনটির যোদ্ধারা। আনুমানিক বেলা ১২টার দিকে জাহাজ তিনটি খুলনার শিপইয়ার্ডের অদূরে পৌঁছালে ভুল সিগনালের কারণে মিত্রবাহিনীর যুদ্ধ বিমানের নিক্ষিপ্ত বোমায় পলাশ ও পদ্মা জাহাজ বিধ্বস্ত হয়।

এরমধ্যে আংশিক বিধ্বস্ত হলে পদ্মার ইঞ্জিন বিকল হয়ে নদীর চরে আটকা পড়ে এবং পলাশ জাহাজে আগুন ধরে যায়। এ সময় জীবন বাঁচাতে অনেকে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

কিন্তু পলাশের ইঞ্জিনরুম আর্টিফিশিয়ার (চিফ ই আর এ) রুহুল আমিন অগ্নিদগ্ধ রণতরী পলাশ ও বিপন্ন মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজেই শহীদ হন।

সেই সঙ্গে আরও শহীদ হন বীর বিক্রম মহিবুল্লাহ, নৌ-সেনা ফরিদ উদ্দিন, আখতার উদ্দিন, দৌলত হোসেন ও নৌ-কমান্ডো মো. রফিকসহ আরও ১০ জন।

তবে এসময় অপর রণতরী পানভেল দ্রুত পিছু হটে রক্ষা পায়। স্থানীয় জনতা যুদ্ধ বিধ্বস্ত পলাশে থাকা বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন ও বীর বিক্রম মহিবুল্লহসহ অন্যান্য শহীদের মরদেহ রূপসা নদীর পূর্ব তীরে সমাহিত করেন।

১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর নিহত রুহুল আমিনের বীরত্ব আর দেশত্ববোধ মূল্যায়নে ১৯৭১ সালের ১৫ ডিসেম্বর সরকার তাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা বীরশ্রেষ্ঠ উপাধি দেয়। আর মহিবুল্লাহকে পান বীরবিক্রম খেতাব।

শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিনের বাবার নাম আজাহার আলী মিয়া। বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের বাগচাঁপড়া গ্রামে। তিনি ১৯৫৩ সালে নৌবাহিনীতে যোগ দেন। এরপর ১৯৭১ সালে ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

১৯৪৪ সালের ৩১ আগস্ট জন্ম নেওয়া বীরবিক্রম মহিবুল্লাহর বাবার নাম সুজা আলী। বাড়ি চাঁদপুরের শাহেদপুর গ্রামে। ১৯৬২ সালে নৌবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে যুদ্ধে অংশ নেন মহিবুল্লাহও।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৩৯ ঘণ্টা,  ডিসেম্বর ১০, ২০১৫
এমআরএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।