ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পাকিস্তান পেয়ার ভুলিয়ে ছাড়তে হবে: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
পাকিস্তান পেয়ার ভুলিয়ে ছাড়তে হবে: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: স্বাধীনতা বিরোধীদের হুশিয়ার করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এটা বাংলাদেশ, এখানে পরাজিত শক্তির দালালি করলে চলবে না। পরাজিত শক্তির দালালরা বাংলাদেশে থাকবে না।


 
স্বাধীন দেশে যুদ্ধাপরাধীদের মদত দেওয়া ও মন্ত্রী বানানোর বিচার বাংলার মাটিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
 
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর খামারবাড়ি’র কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
 
বিএনপি-জামায়াতের প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুঃখ হয় এখানে যে, যারা স্বাধীনতা বিরোধী তাদের দোসর এখনো থাকে বাংলার মাটিতে, আর স্বপ্ন দেখে ঐ পাকিস্তানের। ’
 
‘তাদের পেয়ারে পাকিস্তানের কথা তারা কখনো ভুলতেই পারে না। এ পেয়ারে পাকিস্তানের কথাটাও তাদের ভুলিয়ে ছাড়তে হবে। ’
 
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে বহু খেলা হয়েছে আর কেউ যেন বাংলাদেশ ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। সেভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। ’
 
যুদ্ধাপরাধীদের মদত দেওয়ার বিচার হবে
স্বাধীন দেশে যুদ্ধাপরাধীকে সম্মান দিয়ে মন্ত্রী বানানো দায় দায়িত্ব খালেদা জিয়ার এবং এ বিচার বাংলার মাটিতে হবে বলে শেখ হাসিনা।
 
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের মদত দেওয়া, তাদের সম্মান দেওয়া এটাতো বাংলাদেশের মানুষের ভুলে গেলে চলবে না। এটা বাংলাদেশের মানুষকে মনে রাখতে হবে এবং এ বিচারও একদিন বাংলার মাটিতে হবে। ’
 
‘এ বিচার হবে কারণ হাজার হাজার মানুষকে তারা হত্যা করেছে। একবার যদি ফিরে দেখেন সেই ৭৫ এরপর থেকে ২০০১ এর আগ পর্যন্ত এবং পরবর্তীতেও যেখানে সেখানে তারা মানুষকে হত্যা করেছে। এখনো সুযোগ পেলে করে। ’
 
যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানানো, সম্মান দেওয়া, মদত দেয়ার বিষয়ে খালেদা জিয়া জাতির কাছে কি জবাব দিবেন জানতে চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যখন হয়েছে, বিচারে সে যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসি হয়েছে, খালেদা জিয়া জাতির কাছে কি জবাব দিবে? কি জবাব দিবে? বিচারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এরা যুদ্ধাপরাধী, তাদের সাজা হয়েছে এবং সাজা কার্যকর হয়েছে। ’
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী তাদের ক্ষমতায় বসানো শুরু করেছিলেন জিয়াউর রহমান। আর পরবর্তীতে সেটাই অনুসরণ করেছিলো তার স্ত্রী খালেদা জিয়া ‘
 
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ যেন মাথা তুলে বিশ্ব দরবারে দাঁড়াতে না পারে। বাংলাদেশ যেন একটা ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়। এটাই ছিলো খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমানের চক্রান্ত। এটাই তারা করতে চেয়েছিলো। ২১ বছর ৭৫ থেকে ৯৬ বাংলাদেশতো সেই ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকেই চলে যাচ্ছিলো।
 
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখনই আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করেছি, মনে হচ্ছে যেন বাংলাদেশ অভিশাপ মুক্ত হচ্ছে। যখনই আমরা জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিচার করেছি, মনে হয়েছে বাংলাদেশ অভিশাপ মুক্ত হয়ে অগ্রযাত্রা শুরু করেছে। ’

একটা ঘণ্টাও সময় নষ্ট করতে চাই না
২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশের দিকে নিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কর্তব্য এদেশের স্বাধীনতা যেন ব্যর্থ না হয়। ২১ বছর সময় নষ্ট হয়ে গেছে, আর একটা দিনও একটা ঘণ্টাও সময় নষ্ট করতে চাই না। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা আমরা অব্যহত রাখতে চাই। ’
 
তিনি বলেন, ‘আমি জানি বাঙালি পারে, অসাধ্য সাধন করতে পারে। ৭১’রে যেমন করেছি। ’
 
শেখ হাসিনা বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। ব্যর্থ হতে আমরা দেবো না। এটা আমাদের জীবন পণ। অনেক ত্যাগের বিনিময় বাংলাদেশ, তাই ত্যাগ কখনো আমরা ব্যর্থ হতে দেবো না। ’
 
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব সময় এই প্রতিজ্ঞাই করতে হবে স্বাধীনতার যে পতাকা উদীয়মান, লাল-সবুজ পতাকা বিশ্ব দরবারে সব সময় মর্যাদার সঙ্গে উদীয়মান থাকবে। ’
 
‘এই পতাকার মর্যাদা হানি কেউ কখনো করতে পারবে না, হতে আমরা দেবো না। শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও আমরা এই পতাকার মর্যাদা রক্ষা করবো। সেভাবে আমাদের কাজ করতে হবে। ’
 
অনেক বাধা অতিক্রম করে দেশকে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এটা মনে করলে হবে আমরা খুব সহজ ভাবে অর্থনৈতিক উন্নতি করতে পেরেছি। পদে পদে বাধা, ষড়যন্ত্র, অনেক পথ অতিক্রম করেই আমরা এ জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি। ’
 
তিনি বলেন, ‘একটা দেশকে উন্নত করতে হলে অবশ্যই ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। একটা দেশ স্বাধীন করা, স্বাধীনতা রক্ষা আর স্বাধীনতার সুফল বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া আরও কঠিন। ’
 
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপু মনি, মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এনামুল হক শামীম।
 
** ‘চিল্লালে হবে না, বিচার হবেই’
** এটিই আমাদের জীবনপণ
** খালেদা জিয়া জাতির কাছে কী জবাব দেবেন

বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭, ২০১৫
এমইউএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।