ঢাকা: বাংলাদেশ থেকে নেওয়া নারী শ্রমিকদের সঙ্গে তার একজন নিকট আত্মীয়কে নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে সৌদি সরকার।
সৌদি আরব সফর শেষে দেশে ফিরে বুধবার (০৬ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নুরুল ইসলাম বিএসসি এ কথা জানান।
সৌদি আরবে ব্যাপক চাহিদার পরেও নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা ইস্যুতে অভিযোগ তাদের সঙ্গে স্বজন পাঠানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নারী কর্মীর সঙ্গে পুরুষ স্বজন নিতে রাজি হয়েছে।
তিনি বলেন, গৃহস্থালীসহ ১২টি ক্যাটাগরিতে কর্মী নিতে আগ্রহী সৌদি সরকার। এদের মধ্যে মালি, চালকসহ অন্যান্য কয়েকটি ক্যাটাগরিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করতে পারবে। এক্ষেত্রে নারী সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য তাদের একজন নিকটাত্মীয় সঙ্গে রাখতে পারবেন।
এ প্রক্রিয়া শুরুর প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী বলেন, আমরা এরইমধ্যে আলোচনা করে এসেছি। এখন জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ বসে আলোচনার মাধ্যমে এ প্রক্রিয়া সাইনিং (চুক্তি স্বাক্ষর) করলেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। খুব শিগগিরই এ চুক্তি হবে বলে আশা করছি। এক্ষেত্রে নারীদের মতোই পুরুষদেরও কোনো অভিবাসন খরচ হবে না।
প্রবাসী কল্যাণ সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দার বলেন, যেসব নারীকর্মী সৌদিতে যাচ্ছে তাদের নিরাপত্তার স্বার্থেই আমরা এসব খাতে পুরুষকর্মী পাঠাতে চাই। যাতে করে নারীদের যেকোনো আপদ-বিপদে তারা পাশে দাঁড়াতে পারে। কারণ একজন নিকটাত্মীয় বা কোনো পরিচিত পুরুষ আশেপাশে থাকলে নারীরা সেখানে নিরাপদ বোধ করবে।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী আরও জানান, সৌদি আরব বলেছেন, আমরা যদি ২ লাখ নারী শ্রমিক দিতে পারি, এর সঙ্গে ২লাখ পুরুষ শ্রমিক নিবে তারা।
সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর মধ্যে কুড়িগ্রামে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে গার্মেন্টস প্রশিক্ষণ দিয়ে এখানকার নারীদের বিদেশ পাঠানো হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ থেকে ২০১৪-১৫ সালে জনশক্তি রফতানির চিত্র তুলে ধরা হয়। ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৫-তে ৩০ শতাংশ বেশি বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।
নুরুল ইসলাম বলেন, ২০১৪ সালে চার লাখ ২৫ হাজার ৬৮৪ জন শ্রমিক বিদেশে গেছেন। আর ২০১৫ সালে গেছেন ৫ লাখ ৫৫ হাজর ৮৮১ জন কর্মী। এছাড়াও এই সময়ে নারীকর্মীদের বৈদেশিক কর্মসংস্থান বেড়েছে ৩৬ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ৩ হাজার ৭০৭ জন নারীকর্মীর বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৭৬ হাজার সাতজন।
মালয়েশিয়ার সঙ্গে আটকে থাকা জনশক্তি রফতানির বিষয়ে শিগগিরই একটা সমাধান আসবে বলে আশা মন্ত্রীর।
তিনি রেমিটেন্স অর্জনে প্রবাসীদের অবদানের কথা স্মরণ করে বলেন, বিদেশে অর্জিত অর্থ প্রবাসীরা দেশে প্রেরণ করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থাকার কারণেই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দাতেও বাংলাদেশ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হজরত আলী, জাবেদ আহমেদ, বিএমইটির মহাপরিচালক বেগম শামসুন নাহারসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গত ২৯ ডিসেম্বর সৌদি আরব সফরে যান প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি।
বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৬
জেপি/এসএইচ