ঢাকা: সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনকে ‘পাশবিক বা জংলি’ শাসন বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্টের তৃতীয় জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি শরীফ উদ্দিন চাকলাদার।
মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) ছিলো এ বিচারপতির শেষ কর্মদিবস।
বিচারপতি চাকলাদার বলেন, ১/১১ এর পরের ঘটনা সবার জানা। ও সময়টা এক ধরনের শাসন ছিল, যাকে পাশবিক বা জংলি শাসন বলা চলে।
তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেনের সময় জামিন দেওয়ার জন্য যদি আপিল বিভাগের দিকে তাকিয়ে থাকতাম, তাহলে কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মুক্ত আকাশে বিচরণ করতে পারতেন না। মুচলেকা দিয়ে পাশবিক শাসনের তাবেদার হয়ে বাঁচতে হতো। তাই একজন বিচারককে বুঝতে হবে, কোনটি আইনের শাসন আর কোনটি শাসনের আইন।
বিচারপতি চাকলাদার আরো বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় যদি আইনজীবীরা এক হয়ে আদালতের পাশে এসে না দাঁড়াতেন, তবে হয়তো ওই জগদ্দল পাথর সরানো যেত না। তখন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমান হাইকোর্ট বিভাগে থাকতে সাহস করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জামিন দেন।
তার মতে, স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার পূর্ব শর্ত গণতন্ত্র। গণতন্ত্র সুসংহত না হলে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার কথা চিন্তা না করাই ভালো।
সংবর্ধনায় অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, বিচারপতি চাকলাদার দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করে রায় ঘোষণা করেছেন। সেখানে অনেক বিচারপতি দুই থেকে তিন বছর রায় ঝুলিয়ে রেখেছেন। কিভাবে দ্রুত রায় ঘোষণা ও লেখা যায় তা শরীফ উদ্দিন চাকলাদারের কাছ থেকে শেখার আছে।
খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, বিচারপতি শরীফ উদ্দিন চাকলাদারকে এখান থেকে বড় পরিসর আপিল বিভাগ থেকে বিদায় দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের সে আশা পূরণ হয়নি। আপিল বিভাগে চারজন বিচারপতির পদ খালি থাকা সত্ত্বেও রহস্যজনক কারণে জ্যেষ্ঠ ও অভিজ্ঞ বিচারপতিদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না।
বিচারপতি শরীফ উদ্দিন চাকলাদার ১৯৪৯ সালের ২০ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। সে হিসেবে মঙ্গলবার তার বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হয়।
বিচারপতি চাকলাদার ২০০২ সালের ২৯ জুলাই দুই বছরের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান। এর দুই বছর পর ২০০৪ সালের ২৯ জুলাই হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৬
ইএস/এএসআর