ঢাকা: ফায়ার ফাইটার মনোয়ারের সঙ্গে দেখা রাজধানীর ফার্মগেটে। মোটরবাইক হাঁকিয়ে চলছেন।
তিনি জানালেন, এই বাইকে ৪০ লিটার পানি বহন করা যায়। আর রয়েছে দীর্ঘ পাইপ। যা নিয়ে সহজেই গলি-ঘুপচিতে, কিংবা উঁচু ভবনে ঢুকে পড়া সম্ভব। আর সবচেয়ে সুবিধাজনক দিকটি হচ্ছে, রাস্তায় যানজট থাকলে তার মধ্য দিয়েই ফায়ারবাইক নিয়ে আগে আগে পৌঁছে যাওয়া সম্ভব।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের ডজন খানেকেরও বেশি দেশের ফায়ার ডিপার্টমেন্টে এই ফায়ার বাইক ব্যবহার রয়েছে। এই বাইকে সাধারন এক্সিটিংগুইশার আর হোস রিগসহ জেট গান বহন করা সম্ভব। এছাড়াও কোনো অগ্নি দুর্ঘটনাস্থলে দগ্ধদের দ্রুত চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে ফায়ার বাইকের ব্যবহার চলে।
বিশ্বের যেসব দেশে এই ফায়ারবাইকের প্রচলন রয়েছে তাদের সকলেরই অন্যতম উদ্দেশ্য দ্রুততর সময়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছা ও দ্রুত কাজ শুরু করা। কোনো কোনো বাইকে দুইজনও যেতে পারে। প্রাথমিক কাজ শরু করা, আগুন যাতে আর বাড়তে না পারে সে লক্ষে কাজ করতে পারে। এছাড়া উঁচুভবনে ছোট ছোট অগ্নি দুর্ঘটনা এমন এক কিংবা দুই জন ফায়ার ফাইটার দিয়েই নিভিয়ে ফেলা সম্ভব।
মনোয়ার বলেন, রাজধানীতে অনেক ছোট ছোট অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। সেখানে পুরো একটি ইউনিট পাঠানোর ঝক্কি যেমন রয়েছ, খরচও প্রচুর। সেসব ক্ষেত্রে একটি কিংবা দুটি ফায়ার বাইকই যথেষ্ট।
আরো একটি বিষয় রয়েছ, ফায়ার ফাইটার ঘটনাস্থলে পৌঁছালে জনতার মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসে, সেক্ষেত্রেও এই ফায়ার বাইক খুব কার্যকর, বলেন মনোয়ার।
সবচেয়ে বড় যে কাজটি হয়, তা হচ্ছে দুর্ঘটনার মাত্রা কতটুকু তা দ্রুত কেন্দ্রে জানানো সম্ভব। তাতে কতগুলো ইউনিট পাঠাতে হবে, সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়। সাধারণ মানুষ যখন খবরটি দেয় তখন অনেক বেশি উত্তেজিত থাকে, ফলে আসল পরিস্থিতি অনুধাবন করা কঠিন। ফায়ার বাইক সেক্ষেত্রেও একটি উপযোগী ব্যবস্থা।
এই বাইকে অত্যন্ত শক্তিশালী ইমপালস গান রয়েছে যা যা তীব্র চাপ সৃষ্টি করে পানি ছেটাবে আগুনের ওপর। এটি দিয়ে প্রতি সেকেন্ডে ২০০ মিটার এলাকা ভিজিয়ে দেওয়া সম্ভব। ২০ লিটার করে দু’পাশে মোট ৪০ লিটার পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে এই বাইকে। পানির মধ্যে ফোম মিক্সড থাকায় তেলজাতীয় আগুনও নেভানো সম্ভব এই স্পেশাল বাইক দিয়ে।
কেবল ঢাকাতেই নয়, বিভাগীয় শহর ও গুরুত্বপূর্ণ জেলাশহরগুলোতেও এই বাইক পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় ১০০৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৬
এমএমকে