ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

প্রতিবছর ১২ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬
প্রতিবছর ১২ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে ছবি: পিয়াস / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: সারাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১২ হাজার শিশু পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। তবে সরকার শিশুদের সুরক্ষা দেওয়ার ব্যপারে অঙ্গিকারবদ্ধ।

তাই পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুরোধে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসার আহ্বান করেন প্রতিমন্ত্রী।
 
রোববার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে গুলশান-২ নম্বরে অবস্থিত আমারি রেস্টুরেন্টে ‘সাসস্টেইনেবিলিটি অব চাইল্ড ড্রউনিং প্রিভেনশন ইফোর্টস’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
 
সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্স বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি), জন হপকিংস ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্স ইউনিট এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে।
 
এই তিন প্রতিষ্ঠান পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুরোধে ‘সেভিং অব লাইফস ফ্রম ড্রাউনিং (সলিড) ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। প্রকল্পটি ২০১২ সালে শুরু হয়। প্রকল্পের আওতায় দু’টি মডেল দাঁড় করানো হয়েছে। এর একটি হচ্ছে ‘আঁচল’ এবং অন্যটি ‘প্লেপ্যান’। বাংলাদেশের ৭টি উপজেলায় ৯ থেকে ৩৬ মাস বয়সী শিশুদের এই প্রকল্পের আওতায় এনে সুরক্ষা দেওয়া হচ্ছে।
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার শিশুদের সুরক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণাই করেছেন, কোনো শিশু খোলা আকাশের নিচে ঘুমাবে না। সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে পথশিশুদের শনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পথশিশুদের সঠিক পরিসংখ্যান তৈরি করার জন্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী
 
পথশিশুদের প্রকৃত সংখ্যা নিরুপণ করার পর তাদেরকে শিশু আশ্রমে রেখে  পরিচর্যা করা হবে।
 
তিনি বলেন, আমাদের হাওর ও  নদী এলাকায়, বিশেষ করে বরিশালের কিছু জায়গায় প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু (শূন্য থেকে ৫ বছর) পানিতে ডুবে মারা যাচ্ছে। আমরা আশা করি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ আরো কিছু মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করলে সব ধরনের ইনজুরি থেকে শিশু মৃত্যুরোধ করা সম্ভব।
 
কর্মশালায় গবেষণাপত্রে বলা হয়, প্রতিবছর ৪৩ শতাংশ (১-৪ বছর বয়সী) শিশুর মৃত্যু ঘটছে পানিতে পড়ে। এতে দেখা যায়, বছরে ১২ হাজার শিশুর মৃত্যু ঘটে পানিতে পড়ে, গড়ে প্রতিদিন ১২টি ঘটনা।
 
পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুরোধে সলিড প্রজেক্টকে জাতীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান কর্মশালায় উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা। এই প্রকল্প এক সময় পোলিওমুক্ত বাংলাদেশের মতো পানিতে ডুবে মারা যাওয়াও আদর্শ হিসেবে দাঁড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
 
সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন, হেলথ ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্স, বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) নির্বাহী পরিচালক প্রফেসর এ কে এম ফজলুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের (স্বাস্থ্য দপ্তরের) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রফেসর এএইচএম এনায়েত হোসেন, জন হপকিংস ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্স ইউনিট’র পরিচালক প্রফেসর ড. আদনান হাইদার, ইন্টারন্যাশনাল ড্রাউনিং রিসার্স সেন্টার বাংলাদেশ (আইডিআরসি-বি) পরিচালক ড. আমিনুর রহমান প্রমুখ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৬
এসএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।