পঞ্চগড়: ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর উদ্বোধনের তিন দিন পর নষ্ট হয়ে যায় ওজন পরিমাপক যন্ত্র ওভারলোড এক্সেল। আর সেই থেকে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কে যানবাহনের ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রটি (এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন) বন্ধ রয়েছে।
ফলে, অতিরিক্ত মালামাল বোঝাই করে লাগামহীন ভাবে চলাচল করছে পণ্যবাহী বিভিন্ন যানবাহন। এতে হুমকিতে পড়েছে জাতীয় মহাসড়ক সহ জেলার অভ্যন্তরে থাকা সেতুগুলো।
সূত্র জানায়, অতিরিক্ত পণ্যবোঝাই যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে ২০১৪ সালের শেষ দিকে পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধা মহাসড়কের শিংপাড়া এলাকায় ওজন পরিমাপক যন্ত্র ওভারলোড এক্সেল বসানো হয়। আর ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রটি নির্মাণে খরচ হয় ৫৫ লাখ টাকা।
একই বছরের ২৫ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেন। কিন্তু উদ্বোধনের মাত্র তিন দিনের মাথায় ওজন পরিমাপক যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় স্টেশনের কার্যক্রম।
জেলা শহরের শিংপাড়া এলাকায় ওই কেন্দ্রটিতে বর্তমানে ১৫ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রহরী (আনসার) বাংলানিউজকে জানান, চীনের তৈরি ওই ওজন পরিমাপক যন্ত্রটি অত্যন্ত নিম্নমানের হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে। যানবাহন চালক ও পঞ্চগড় জেলা পাথর-বালি ব্যবসায়ী ও সরবরাহকারী সমিতির সদস্যরা শুরু থেকেই এই ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের বিরোধিতা করে আসছিলেন।
এখানে তারা নিয়ম মেনে কোনো গাড়ি সহজে থামাতে চান না। কারণ ওজন নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের দুইশ গজের মধ্যেই পাথর বালি সমিতির সদস্যরা ‘বাঁশকল’ দিয়ে ট্রাক প্রতি চাঁদা আদায় করেন।
পঞ্চগড় জেলা সড়ক ও জনপদ (সওজ) কার্যালয় সূত্র জানায়, চালু হওয়ার পরপরই অতিরিক্ত ওজনের মালামাল নিয়ে আসা ট্রাকগুলোর তিন দিন ওজন মাপা হয়েছিল। প্রায় প্রতিটি ট্রাকে মাত্রাতিরিক্ত মালামাল পাওয়া যায়।
নিয়ম অনুযায়ী দুই এক্সেল গাড়ির সর্বোচ্চ ওজন সীমা ১৫ মেট্রিকটন, তিন এক্সেল গাড়ির ২২ থেকে ২৫ মেট্রিকটন, চার এক্সেল ২৫ মেট্রিকটন এবং ৪ এক্সেলের বেশি গাড়ির জন্য সর্বোচ্চ ৩০ মেট্রিকটন মালামাল বহন করতে পারবে।
পঞ্চগড় সড়ক ও জনপদ বিভাগের (সওজ) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী নুরুল আলম বাংলানিউজকে জানান, ধারণ ক্ষমতার অধিক মালামাল ওজন করতে গিয়ে ওজন পরিমাপক যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে গেছে বলে আমরা ধারণা করছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৫, ২০১৬
পিসি