ঢাকা: চার মাস ধরে কান্নাকাটি করেও ১৫ বছরের সোনিয়া আক্তারকে ফেরত পাচ্ছেন না পরিবারের সদস্যরা। বাসার মালিক বলছেন সে নিখোঁজ রয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ছোট বোন সোনিয়াকে ফেরত পেতে উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করে কথাগুলো বলছিলেন বড় বোন আনোয়ারা।
গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক ও শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে সোনিয়াকে ফেরতের দাবি জানান নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর গ্রামের আনোয়ারা।
কথা বলতে গিয়ে উচ্চস্বরে কান্না করতে থাকলে সমাবেশস্থলে ভিন্নরকম পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
আনোয়ারা জানান- তার বোন সোনিয়া রাজধানীর বনশ্রী সি ব্লকের ১ নম্বর রোডের ২২ নম্বর বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজ করতেন। গত কোরবানির ঈদের সময় বাসায় গিয়ে আমার বোনকে নিয়ে যেতে চাইলে বাসার মালিক তাকে যেতে দেননি। এমনকি আমার সঙ্গে দেখা করতেও দেননি। গৃহকর্তা বলেন, সোনিয়া আরো পড়ে যাবে। সম্প্রতি সোনিয়াকে নিয়ে আসতে গেলে গৃহকর্তা বলেন সে নিখোঁজ রয়েছে। তিনি কান্না করে একটি কথাই বলছেন আমার বোনকে ফেরত দিন।
সাংবাদিকরা বাসার মালিকের নাম জানতে চাইলে তিনি তাও বলতে পারেননি আনোয়ারা।
সমাবেশে গৃহশ্রমিক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড বন্ধের দাবি জানিয়েছে গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক ও শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম।
মানববন্ধন ও সমাবেশে অংশ নেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, ব্লাস্ট, নারী মৈত্রী, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফন্ট্র এবং শ্রমিক কর্মচারি ঐক্য পরিষদ নেতারা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি সংসদ সদস্য শিরিন আখতার, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের আহ্বায়ক ড. হামিদা হোসেন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা আবুল হোসাইন এবং সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফন্ট্রের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন।
বক্তরা বলেন, গৃহশ্রমিক কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা গত ২২ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর দেশে ৮জন গৃহশ্রমিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়। এছাড়া গুম হয়েছে অনেকেই। আর প্রতিদিনই নির্যাতনের শিকার হচ্ছে গৃহশ্রমিকরা। তাই ‘গৃহশ্রমিক কল্যাণ ও সুরক্ষা নীতিমালা’ অনুমোদনই শেষ কথা নয়। এর পুরোপুরি প্রয়োগ দরকার। নীতিমালা অনুমোদনের পরেও ৮জন গৃহশ্রমিক হত্যার শিকারই তার প্রমাণ। তাই নীতিমালার সুষ্ঠু প্রয়োগের মাধ্যমে এর প্রতিরোধ চাই আমরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
এসএমএ/বিএস