বগুড়া: কাগজে কলমে এখন চলছে অগ্রহায়ণ। সপ্তাহ গড়ালেই পৌষ।
পৌষের আগমনধ্বনিতে ভারী পোশাক আর লেপ-তোষকের দোকানগুলোতে চলছে ব্যস্ততা। এই ব্যস্ততা দেখা যাচ্ছে বগুড়া শহর ও শহরতলীর আশপাশের এলাকার লেপ-তোষক তৈরির কারখানাগুলোতেও।
সম্প্রতি কয়েকটি কারখানা ঘুরে দেখা যায়, কারিগররা তুলোর স্তূপ করে তার ওপর ওপর ধনুক দিয়ে আঘাত করে চলেছেন। এতে তুলোধনো হচ্ছে স্তূপটা। পুরোপুরি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে সেই তুলো ঢোকানো হতে থাকে রং-বেরংয়ের কাপড়ের তৈরি লেপ-তোষকের কভারে।
এরপর শুরু হয় সুঁই-সুতোর কাজ। কভার ও ভেতরে ঢোকানো তুলা ভেদ করে খস খস শব্দ তুলে চলতে থাকে সুঁই। সুঁই-সুতোর গাঁথুনিতে বাঁধা পড়ে যায় সেই কভার-তুলো। আর এতেই তৈরি হয়ে যায় একেকটি আকর্ষণীয় লেপ-তোষক।
শহরের ঝাউতলায় রেললাইন ঘেঁষে সারিবদ্ধভাবে বেশ কয়েকটি লেপ-তোষকের দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। এসব দোকানের মালিক ও কারিগররা অর্ডার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে ভীষণ ব্যস্ত। পাশাপাশি পুরনো লেপ-তোষক মেরামত করতে হচ্ছে তাদের। সারাবছরের ব্যবসা শীতের এ কয়েক মাসে পুষিয়ে নিতে যেন মরিয়া তারা।
এখানকার কয়েকজন দোকানি হলেন- আবু হানিফ, রমজান আলী, মফিজ উদ্দিন, ইব্রাহিম হোসেন ও শামীম হোসেন। এ দোকানিরা বাংলানিউজকে বলেন, প্রত্যেক বছর শীতের শুরু থেকেই ক্রেতাসাধারণ লেপ-তোষকের দোকানগুলোয় আসতে থাকেন। শীতের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতাদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটছে না।
তারা আরও জানান, সারাবছর তেমন একটা ব্যবসা হয় না। পুরো বছরের ব্যবসা শীতের এই ৩-৪ মাসে করতে হয়। তবে এজন্য তাদের ব্যাপক শ্রম দিতে হয়। কাজ করতে করতে অনেক দিন-রাত পেরিয়ে যায়। খাবার সময় থাকে না।
তবে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে ব্যবসায় লাভ কমে এসেছে বলে জানান এ দোকানিরা। তারা জানান, আগের তুলনায় ব্যবসায় প্রতিযোগিতা অনেক বেড়ে গেছে। তাই সামান্য লাভেই ক্রেতাসাধারণের কাজ করে দিতে হয়।
একটি কারখানার মালিক আবু হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, লেপ-তোষক তৈরিতে গার্মেন্টেসের ঝুটার তুলো ও কার্পাস তুলো ব্যবহার করা হয়। একটি সিঙ্গেল লেপ তৈরিতে ৫৫০-৭০০ টাকা, সেমি-ডাবল লেপ তৈরিতে ৬৬০-৮০০ টাকা এবং ডাবল লেপ তৈরিতে ৮০০-১৫০০ টাকা খরচ হয়। এরমধ্যে রয়েছে সুতো, কাপড় ও মজুরি ব্যয়।
তবে তোষক তৈরির ক্ষেত্রে দাম বেশি পড়ে। তুলার মান, পরিমাণ, নারিকেলের ছোবলা ও কাপড়ের ওপর নির্ভর করে একেকটি তোষক তৈরির ব্যয়- জানান হানিফ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৬
এমবিএইচ/এইচএ/