ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর পেছনে ব্রহ্মপুত্র নদের বালুচরের বধ্যভূমির জায়গা দখল করে নির্মিত হয়েছিল পাকা ঘর। অবৈধ এ ঘর থেকে ভাড়াও তুলতো দখলদাররা।
গত ১ ডিসেম্বর বাংলানিউজে ‘দখল হয়ে যাচ্ছে বধ্যভূমি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসক খলিলুর রহমানের নির্দেশে শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অবৈধ এ স্থাপনাটি ভেঙে দেয় স্থানীয় সদর উপজেলা প্রশাসন।
এ ঘটনায় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জেলা প্রশাসক (ডিসি) খলিলুর রহমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তারা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, মুক্তিযুদ্ধের সময় অসংখ্য মানুষকে সেখানে তথাকথিত ‘ফায়ারিং স্কোয়াডের’ নামে হত্যা করা হয়। এরপর ব্রহ্মপুত্র নদে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে ও চরে তখন পড়ে ছিল শত শত মানুষের কঙ্কাল।
পাক হানাদার বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞের প্রতীক চিহ্নিত করে স্বাধীনতার ৩৭ বছর পর এখানে গড়ে ওঠে বধ্যভূমি। জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত এ বধ্যভূমির জায়গা দখল করতে সেখানে নির্মাণ করা হয় পাকা ঘর।
গত ১ ডিসেম্বর বাংলানিউজে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর জেলা প্রশাসক (ডিসি) খলিলুর রহমানের নজরে আসে। তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) গালিব খানকে বধ্যভূমির জায়গা দখল করে নির্মিত পাকা ঘর ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
বাংলানিউজের প্রকাশিত প্রতিবেদনটি এ প্রতিনিধির ফেসবুকে আপলোডের পর মন্তব্য করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) গালিব খান।
তিনি লিখেন- ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী উল্লিখিত বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সহকারী কমিশনারকে (ভূমি, ময়মনসিংহ সদর) অনুরোধ করা হলো। তিনি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে (রাজস্ব, ময়মনসিংহ) বিষয়টি অবহিত করবেন। ’
এর ঠিক ৮ দিনের মাথায় শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুস সালাম জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনোয়ার হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে বধ্যভূমি ঘেঁষে নির্মিত পাকা ঘর ভেঙে দেন।
তিনি বাংলানিউজকে জানান, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে এ অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার উপজেলা প্রশাসনকে জানান, শিগগিরই এ বধ্যভূমির চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। যাতে করে পরবর্তীতে কেউ আর এ জায়গা দখল করতে না পারে।
স্থানীয় বাসিন্দা ধ্রুব সাহা বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাংলানিউজের রিপোর্টে কাজ হয়েছে। ময়মনসিংহের নতুন জেলা প্রশাসক কথা নয়, কাজে বিশ্বাস করেন। নাগরিক সমস্যার সমাধানে তার তৎপরতা জনমনে প্রশংসিত হয়েছে। এ বধ্যভূমি দখলমুক্ত করে আবারো দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন জেলা প্রশাসক। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৬
এমএএএম/জেডএস