হরিণগুলো জালের অপর প্রান্তে মানুষ দেখলেই ছুটে আসে দল বেধে একটু খাবারের আশায়। জালের ফাঁক দিয়ে মুখ বের করে দিয়ে মানুষদের বোঝায় তাদের ক্ষুধা পেয়েছে।
আর হরিণ দেখতে আসা মানুষেরাও তাদের মুখে তুলে দেয় বাদাম-বুট জাতীয় খাবার। যা খেয়েও পেট ভরে না তাদের।
দিনাজপুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি রামসাগর জাতীয় উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানায় গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
রামসাগরের এই মিনি চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৪৩টি চিত্রা হরিণ রয়েছে। সরকার থেকে হরিণগুলোর জন্য যে পরিমাণ খাদ্য বরাদ্দ রয়েছে তা তাদের চাহিদার তুলনায় চার ভাগের এক ভাগ। দিনাজপুর রামসাগর চিড়িয়াখানার সহকারী পর্যবেক্ষক ফসিউল আলম বাংলানিউজকে জানান, দিনাজপুর বন বিভাগের অধীনে ১৯৯৯ সালে ১২ আগস্ট ৬টি চিত্রা হরিণ দিয়ে শুরু হয় রামসাগর চিড়িয়াখানার যাত্রা। ৬টি হরিণ বংশ বিস্তার করতে করতে বর্তমানে ৪৩টিতে এসে দাঁড়িয়েছে। হরিণের প্রিয় খাদ্য বুনো শাপলা রামসাগর দিঘিতে চাষ করত বন বিভাগ। সরকারিভাবে বরাদ্দ কম দিলেও দিঘির বুনো শাপলা দিয়ে কোনমতে হরিণের খাদ্য চাহিদা মেটানো যেত। কিন্তু সম্প্রতি সাধারণ মানুষের মধ্যে রামসাগরে টিকিটের মাধ্যমে মাছ ধরার ব্যবস্থা করা হয়। সেসময় মাছ শিকারিরা বুনো শাপলা গুলো উপরে ফেলে দেয়। এতে আরো খাদ্য সংকটে পড়ে এখানকার হরিণগুলো।
রামসাগর চিড়িয়াখানায় হরিণ দেখতে আসা রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জ মহদীপুর এলাকার মো. মাসুম বাংলানিউজকে বলেন, হরিণগুলো আমাদের দেখতে পেয়ে ঝাঁক বেধে কাছে ছুটে এসে মুখ বাড়িয়ে দেয়। পাশেই থাকা বাদাম-বুটের দোকানী বললেন খাওয়ার জন্য হরিণগুলো মুখ বাড়িয়েছে। কথাটি শুনে বাদাম কিনে তাদের মুখে তুলে দেই। এসময় দ্রুত এই চিত্রা হরিণগুলোর পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে দিনাজপুর রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল সালাম তুহিন বাংলানিউজকে জানান, হরিণের খাদ্য সংকটের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান হবে।
রামসাগর চিড়িয়াখানায় হরিণের পাশাপাশি ৫টি বানর ও ৩টি অজগর সাপ রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৭
আরএ