এখন আর নেই সেই ঝোঁপ-ঝাড়। চলছে ডিজিটাল স্ক্রিন লাগানোর কর্মযোগ।
সড়কপথ ঘুরে দেখা যায়, বনানী অংশ থেকে শুরু হওয়া এই সৌন্দর্য বৃদ্ধি কাজের অংশ হিসেবে প্রথমে যাত্রী ছাউনি বানানো শেষ পর্যায়ে। যাত্রী ছাউনিতে অত্যাধুনিক স্ক্রিন লাগানো হচ্ছে। এরপর পরিচ্ছন্ন আসন তৈরি করা হবে।
সপ্তাহ দুয়েক ধরে চীনের একটি কোম্পানির প্রতিনিধিদল এখানে কাজে যোগ দিয়েছে। তারা করছে, ডিজিটাল প্যাসেঞ্জার শেড, ওয়াইফাই, সিসি ক্যামেরা, ফ্রি মোবাইল চাজিং স্টেশন, ডিজিটাল ডাস্টবিন, ডিজিটাল ট্রাফিক সাইন, বেন্ডিং মেশিন, ডিজিটাল অ্যাডভাটাইসমেন্ট বোড, এটিএম বুথ, অটো রোড ডাস্ট ক্লিনার, এলইডি স্ট্রিট লাইট, এলইডি অরনামেন্টাল গার্ডেন লাইট এবং ডিজিটাল পুলিশ বক্স বসানোর কাজ।
এই প্রথম দেশে কোনো বিউটিফিকেশন কাজে বিদেশি বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। প্রযুক্তিগত সংযোগ ও তা স্থাপনে কাজ করছেন তারা। এদিকে সড়কের দুই ধারে লাগানোর জন্য থাইল্যান্ড থেকে আনা হচ্ছে ২০ ফুট উচ্চতার ২ হাজার বনসাই গাছ।
বিশেষজ্ঞ প্রতিনিধিদলের প্রধান চীনের ফুজহো রিযেলি কোম্পানি লিমিটেডের কর্ণধার জিমি রাও এক সন্ধ্যায় তার দল নিয়ে ডিজিটাল বোডের স্ক্রিন ম্যাচিং করছিলেন। এসময় বাংলানিউজকে জানান, কাজ শেষ হলে চীনের সাংহাই এবং সিঙ্গাপুর বা যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের মতো দেখাবে এই সড়কপথ।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এন এম ছিদ্দিক বাংলানিউজকে বলেন, বিমানবন্দর থেকে নেমেই বিদেশি, ভিআইপিসহ প্রবাসীরা এই সড়কপথ ব্যবহার করেন। এজন্য সড়কটি দৃষ্টিনন্দন করে তুলতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। দেশের অন্য জায়গাতেও সিটি করপোরেশনের ভেতরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের যেসব সড়ক আছে সেখানে একই আদলে সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, কাজ শেষে হলে সড়কপথটি ব্যবহার করতে যে কারও ভালো লাগবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে বিউটিফিকেশন কাজটি করছে ‘ভিনাইল ওয়ার্ল্ড গ্রুপ’। তারা বনানী এমইএস থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত আড়াইশ’ ফুট দৈর্ঘ্যের ১০টি ডিজিটাল যাত্রী ছাউনি বসানোর কাজে নিয়োজিত। এসব ছাউনির মধ্যে থাকবে ওয়াইফাই, এটিএম বুথ, মোবাইল রিচার্জ, ওয়াশরুম এবং কয়েন দিয়ে পণ্য কেনার অভিনব সুবিধা। থাকছে নামাজ পড়ার কক্ষ, শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর পৃথক জায়গা ও ফ্রি বিশুদ্ধ পানির সুবিধাও। এর সঙ্গে থাকবে ডিজিটাল পুলিশ বক্সও; যেখান থেকে সড়কপথের নিরাপত্তা পরিস্থতি মনিটরিং খুব সহজে করতে পারবে পুলিশ।
ওয়াকওয়ে ধরে দুইপাশে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা বসানো হবে। ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ভাষা ও স্বাধীনতার আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের নানা ঘটনাপ্রবাহ ফুটে উঠবে তিনটি স্মৃতিস্তম্ভে। যার মধ্যে ১২টি মাউন্টেন ঝরনাও থাকবে। নিকুঞ্জ এলাকায় এ প্রকল্পের অর্থায়নেই কিডস প্লেয়িং জোন থাকবে। আর নিকুঞ্জ থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত পৃথক সাইকেল লেন করা হবে।
পুরো বিউটিফিকেশন কাজে ব্যয় হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ কোটি টাকা। নিজস্ব অর্থায়নে ‘ভিনাইল ওয়ার্ল্ড’ এটি করে দিচ্ছে। প্রতি বছরে এই ৬ কিলোমিটার সড়কের রক্ষণাবেক্ষণে তারা ব্যয় করবে পাঁচ কোটি টাকা। এভাবে ১০ বছর তারা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে।
ভিনাইল ওয়ার্ল্ডের গ্রুপ জানায়, আগামী মার্চের মধ্যে দৃষ্টিনন্দন অংশগুলো দৃশ্যমান হয়ে যাবে। আর পুরো কাজ শেষ হবে জুন-জুলাইয়ের মধ্যে।
বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৭
এসএ/আইএ