ক্যান্সার প্রতিষেধকসহ জীবনরক্ষাকারী মূল্যবান ওষুধ চীনে তৈরি করে দেশের বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া চক্রের তিন সদস্যকে আটক করেছে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ২১ হাজার পাতা ওষুধ জব্দ করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন- রুহুল আমিন ওরফে দুলাল চৌধুরী, নিখিল রাজবংশী ও মো. সাঈদ।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অর্গানাইজড ক্রাইমের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) মোল্লা নজরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আটককৃতরা প্রায় সময়ই চীনে যাতায়াত করেন। সেখানে গিয়ে তাদের চাহিদা অনুযায়ী ভেজাল ওষুধ তৈরির অর্ডার করেন। ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডসহ নিন্মমানের উপাদান দিয়ে মূল্যবান জীবন রক্ষাকারী ওষুধ তৈরি করা হয়। তারপর ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী আমদানির আড়ালে কাস্টমসের কিছু কতিপয় অসাধু কর্মকর্তার সহায়তায় সেসব ওষুধ কন্টেনারে করে আমদানি করে চক্রটি।
পুলিশ সুপার বলেন, আমরা এমটিএক্স, ক্লোমাইড ও রিভোকন নামে তাদের কাছে তিন ধরনের ভেজাল ওষুধ পেয়েছি। এসব ওষুধ প্রতি পাতা তৈরি এবং আমদানিতে তাদের ব্যয় হতো ১২ টাকা। যেগুলো দেশে প্রতি পাতা বাজার মূল্য দুই থেকে তিনশ’ টাকা। ওষুধগুলো তারা তাদের এজেন্টদের কাছে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করতো।
মোল্লা নজরুল বলেন, চক্রটি চীন থেকে ভেজাল ওষুধগুলো এনে একটি গোডাউনে রাখতো। তারপর ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া হতো। ওষুধের সঙ্গে দেশের প্রতিটি নাগরিক জড়িত। জীবনরক্ষাকারী এসব মূল্যবান ওষুধে ভেজালের ফলে মানুষ চরম পর্যায়ে প্রতারিত হয়েছেন। চক্রের বিরুদ্ধে কাজ শুরু হয়েছে, আমরা এটি শেষ করতে চাই।
আটককৃতদের বিষয়ে তিনি বলেন, তারা মূলত জুয়ারি। বিভিন্ন ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে গিয়ে তাদের পরিচয়। এরপর পরস্পরের যোগসাজসে চীনে ভেজাল ওষুধ তৈরি করে আমদানির পরিকল্পনা করে তারা।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে চক্রের তিন সদস্য আটক এবং তাঁতীবাজার এলাকায় তাদের গোডাউন থেকে ওষুধগুলো জব্দ করা হয়।
আমরা এর সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম পেয়েছি, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওষুধগুলো কোন কোন পয়েন্টে বিক্রি হয় এবং তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান মোল্লা নজরুল ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
পিএম/জেডএস