এছাড়া কোথাও-কোথাও তিনি তৈয়ব ওরফে তালহা শেখ ওরফে শ্যামল শেখ ওরফে হোসাইন ওরফে সাজিদ ওরফে ডেঞ্জার ওরফে সাকিল ওরফে মোখলেছ ওরফে শফিক নামেও পরিচিত।
পরে ২০১০ সালে সাঈদ ভারতের নদীয়া জেলার দায়িত্ব নিয়ে সেখানে জেএমবির কার্যক্রম শুরু করেন।
সাঈদকে ধরিয়ে দিতে কলকাতা ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) শাখা ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করে। এরপর ২০১৫ সালের শুরুর দিকে সাঈদ পুনরায় বাংলাদেশে পালিয়ে এসে বছরের শেষের দিকে নব্য জেএমবিতে যোগ দেন। এ সময় সাংগঠনিক কাজে দক্ষ হওয়ায় ২০১৭ সালের প্রথম দিকে দক্ষিণাঞ্চলের নব্য জেএমবির প্রধান ও শুরা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পান সাঈদ। এভাবে সর্বহারা আবু সাঈদ থেকে বনে যান জেএমবির দক্ষিণাঞ্চল প্রধান।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে বগুড়া জেলার পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদে সম্মেলনে জেলার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও জানান, শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ও পুলিশ সদর দফতরের ইন্টেলিজেন্স শাখার সদস্যরা যৌথ অভিযান চালিয়ে জেলার নন্দীগ্রাম উপজেলার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের ওমরপুর হাট সংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে আটক করে।
এ সময় তার কাছে থেকে একটি নাইন এমএম পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, আটটি গুলি, একটি চাকু ও একটি রেজিস্ট্রেশন বিহীন মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল, আব্দুল জলিল, সনাতন চক্রবর্তী, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী প্রমুখ।
আবু সাঈদের জঙ্গি জীবন: জেএমিবর দক্ষিণাঞ্চল প্রধান আবু সাঈদ ২০০২ সালে জেএমবিতে যোগ দিয়ে উত্তরাঞ্চলে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করেন। পরে ২০০৪ সালে রাজশাহী জেলার সামরিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান সাঈদ। পরে বাগমারার হামিরকুৎসা গ্রামে বাংলা ভাই ও শায়খ আব্দুর রহমানের সঙ্গে সর্বহারা নিধনে অংশ নেন। ওই বছর সাঈদের মাধ্যমে নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় নেতা সোহেল মাহফুজ জেএমবিতে যোগ দেন।
২০০৫ সালে নওগাঁ জেলার দায়িত্ব পাওয়ার পরে ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলায় তার নেতৃত্বে নওগাঁতে চারটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
পরে ২০০৭ সালে ভারতে পালিয়ে যান সাঈদ। ২০০৯ সালে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার জেএমবির সদস্য ইয়াদুলের মেয়ে খাদিজাকে বিয়ে করেন তিনি। সেখান থেকেই জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা করতেন সাঈদ। ২০১০ সালে ভারতের নদীয়া জেলার জেএমবির দায়িত্ব নেওয়ার পরে কার্যক্রম শুরু করার পরে ২০১২ সালে জেলার পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম ও বর্ধমান জেলারও দায়িত্ব পান সাঈদ।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআইএস/